নওগাঁর মান্দায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি গভীর নলকূপ পরিচালনা নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রায় শতাধিক বিঘা জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। নলকূপের ঘরে পাল্টাপাল্টি তালা লাগানোকে কেন্দ্র করে অপারেটর ও কৃষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুইপক্ষের মুখোমুখী অবস্থানের কারণে যে কোনো সময় সেখানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় ভূক্তভোগী কৃষকরা জানান, উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের রামপুর মৌজার নলকূপটি ১০ বছর ধরে কৃষক সমিতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। এর অপারেটরের দায়িত্বে ছিলেন পাপিয়া খাতুন। এবারও মাঠের কৃষকের সম্মতিতে বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ নতুন অপারেটর হিসেবে পাপিয়া খাতুনকে নিয়োগ দেন।
এরপর পাপিয়া খাতুনের স্বজন পরিবর্তিত অপারেটর ইলিয়াস সরদার একক সিদ্ধান্তে নলকূপটি চালু করলে মাঠের কৃষকদের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় অপারেটর পরিবর্তনের দাবী জানিয়ে অভিযোগ দেন কৃষকেরা।
রামপুর গ্রামের বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ কৃষকের অভিযোগ আমলে না নিলে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওই গভীর নলকূপের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে উভয়পক্ষের তালা খুলে নতুন তালা লাগিয়ে দেন বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ।
মাঠের কৃষক শাহিন আলম অভিযোগ করে বলেন, অপারেটর পরিবর্তনের দাবী উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার চাবি বাণিজ্যের মাধমে অপারেটর পাপিয়া খাতুনের স্বজনকে নলকূপ ঘরের চাবি হস্তান্তর করে মান্দা বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী এসএম মিজানুর রহমান। বেলা ১১টার দিকে নলকপূটি চালু করা হলে কৃষকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ঘরে আবারও তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
কৃষক আবুল হোসেন বলেন, 'মাঠের ৫ বিঘা জমিতে আমি বোরো ধানের আবাদ করি। প্রতিবছর পৌষ মাসের মধ্যেই চারা রোপণের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এবার জটিলতার কারণে এখন পর্যন্ত সেচকাজ শুরু হয়নি। সময়মতো রোপণ কাজ না হওয়ায় বয়স বেশি হয়ে বীজতলায় চারা বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। জটিলতার নিরসন না হলে ওই মাঠের প্রায় শতাধিক বিঘা জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকবে।' পাপিয়া খাতুনের পরিবর্তিত অপারেটর ইলিয়াস সরদার বলেন, 'আমরাই নলকূপটি স্থাপন করেছি। এবছর নতুনভাবে বউমা পাপিয়া খাতুনকে অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান চাবি দিয়ে নলকূপটি চালুর নির্দেশ দেন। তাই চালু করেছি।'
মান্দা ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলীকে মোবাইলফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরও বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর রাখছি।