মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

দোয়ারাবাজারের চকবাজারে মলমূত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ ওয়াশবস্নক স্থাপনের দাবি

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
দোয়ারাবাজারের চকবাজারে মলমূত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ ওয়াশবস্নক স্থাপনের দাবি

টয়লেটের সেপটি ট্যাংকির পানি গড়াচ্ছে চারপাশের জায়গায়। খোলা জায়গায় ছড়াচ্ছে মলমূত্র। হাসমুরগির মাধ্যমে মলমূত্র ছড়িয়ে যাচ্ছে পাশের দোকানপাট ও বসতবাড়িতে। তার ওপর বাড়ছে মশামাছির উপদ্রম্নপ। এসব মশা মাছি বসতবাড়ি, দোকানপাট, হোটেল রেস্টুরেন্ট ও চা স্টলের খাদ্য সামগ্রীর ওপর বসে রোগজীবানুর বিস্তার করছে। টয়লেটের পাশেই টিউবওয়েল। নোংরা পরিবেশে টেউবওয়েল থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

এমন অস্বাস্থ্যকর দৃশ্য দেখা গেছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের চকবাজারে। এ বাজারের টয়লেট-ই এখন বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতা, বাসিন্দা ও পথচারিদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। প্রায় ৩ শতাধিক দোকানপাট অধু্যষিত চকবাজারের উন্নয়ন হলেও বাজারটির স্যানিটেশন ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি, উল্টো দিন দিন এটির অবনতি হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারের বর্তমান টয়লেটটি প্রায় ২০ বছর আগের পুরোনো। সংস্কারের অভাবে এটি এখন বাজার ও আশপাশের এলাকার পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। গত সরকারের আমলে চকবাজারের দক্ষিণ পাশে সরকারি ভাবে একটি ওয়াশ বস্নক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্থান নির্ধারণও করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি কোনো কারণ ছাড়াই বাজারের সরকারি ওয়াশ বস্নক স্থাপনের প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে।

চকবাজারের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, 'বাজারের টয়লেটের কয়েজ গজের মধ্যেই আমার বসতঘর। মলমূত্রের দুর্গন্ধে পরিবার পরিজন নিয়ে বসতঘরে থাকা এখন দুঃসহ হয়ে উঠেছে।

এই নোংরা পরিবেশের কারণে প্রায়সময়ই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রতি মাসেই আমাদেরকে ডাক্তারের সরণাপন্ন হতে হয়। বাজার কমিটি, স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানকে বার বার এই সমস্যার কথা বলেছি। কিন্তু আজোবধি তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখান থেকে এই টয়লেটটি অন্যত্র সরিয়ে একটি স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশ বল্ক স্থাপন জরুরি।'

তিলোরাকান্দি গ্রামের কিনুই মিয়া বলেন, 'প্রগ্রাব পায়খানার দুর্গন্ধে চলাফেরা করা যায় না। এখানে নতুন করে একটি ওয়াশ বস্নক নির্মাণ করা দরকার।' ব্যবসায়ি রুবেল বলেন, 'দুর্গন্ধে বাজারের দোকানপাটে বসা যায়না। আমাদের ব্যবসা করতে কষ্ট হয়।

চকবাজার শাহী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, 'পায়খানার দুর্গন্ধে বাজারে হাটা যায়না। চকবাজারে একটি ওয়াশ বস্নক স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।'

লক্ষীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, 'চকবাজার ও বাংলাবাজারে দুইটি ওয়াশবস্নকের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু বর্তমান অন্তর্বতী সরকার এটি বাতিল করেছে। নতুন কোনো বরদ্দা আসলে এখানে ওয়াশ বস্নক নির্মাণ করা হবে।'

দোয়ারবাজার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী বিপ্রেশ তালুকদার জানান, 'জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের মাধ্যমে চকবাজারে একটি ইমপ্রোভ টয়লেট (ছোট ওয়াশবস্নক) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই প্রজেক্টটিই বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ওয়াশবস্নকটি আর হয়নি। শুধু চকবাজারই নয়, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে যেকয়টি জেলায় ওয়াশবস্নক হওয়ার কথা ছিলো সবগুলিই বাতিল হয়ে গেছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে