সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় সরকারিভাবে আমন মৌসুমের ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানে চাল সংগ্রহ হলেও এখন পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি। সরকারিভাবে কেজি প্রতি ধানের দাম কম থাকা এবং বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে ধানের বাজারদর বেশি থাকায় এ ধান সংগ্রহ অভিযান সফল হয়ে উঠেনি যা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মত প্রকাশ করেন।
উপজেলা খাদ্য অফিস সুত্রে প্রকাশ, আমন মৌসুমের ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে। চলবে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রম্নয়ারী পর্যন্ত।
নকিপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন, সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে আমন ধানের দর প্রতি কেজি ৩৩ টাকা ও চাল সিদ্ধ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ৪৭ টাকা এবং চাল আতপ প্রতি কেজি ৪৬ টাকা। উপজেলায় এবার আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১০৫০ মেট্রিক টন ও সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৫৮ মেট্রিকটন এবং আতপচাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ মেট্রিকটন। ধান সংগ্রহের স্থান দুটি হল নকিপুর খাদ্য গুদাম ও নওয়াবেঁকী খাদ্য গুদাম। বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে আমন ধানের বাজার দর উর্ধ্ব গতির কারণে সরকারিভাবে আমন সংগ্রহ অভিযানে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এক কেজি ধানও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি বলে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মত প্রকাশ করেন। গতবার বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫২ মেট্রিক টন এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছিল ৫১৪ মেট্রিক টন। প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩২টাকা। খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতামত প্রকাশ করে বলেন বাঁকী ১৩৮ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়ে যেত কিছু সমস্যার সৃষ্টি না হলে। চাল সিদ্ধ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৭ মেট্রিক টন ও চাল আতপ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ মেট্রিক টন। দাম নির্ধারণ ছিল সরকারিভাবে সিদ্ধচাল কেজি প্রতি ৪৫টাকা ও আতপচাল কেজি প্রতি ৪৪ টাকা। জানা যায় চাল সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সেটি অর্জিত হয়েছিল। শ্যামনগরে সরকারের সাথে চুক্তিকৃত ৬টি মিলের মাধ্যমে চাল সংগ্রহ করা হয় বলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়। এবার আমন মৌসুমেও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত বলে মত প্রকাশ করেন উপজেলা খাদ্য অফিস।
ধান ব্যবসায়ী মুন্সিগঞ্জের রমেশ সরকার বলেন বর্তমানে বস্তা প্রতি অর্থাৎ ৬০ কেজি ধান ক্রয় বিক্রয় করছেন দুই হাজার তিনশত পঞ্চাশ থেকে দুই হাজার চারশত টাকায়। সেখানে সরকারিভাবে ৬০ কেজি ধানের দাম এক হাজার নয়শত আশি টাকা।
নকিপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন বলেন শ্যামনগর উপজেলায় দুইটা ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল বিক্রয় করা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এক জন ডিলার প্রতিদিন ২ মেট্রিকটন করে চাল বিক্রি করতে পারবেন প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে। খোলা বাজারের চাল বিক্রীর স্থান নকিপুর গরু হাট সংলগ্ন ও সোনার মোড় নামক স্থানে। প্রতি জন ৫ কেজি করে চাল ক্রয় করতে পারবেন। সপ্তাহে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিন খোলা বাজারে চাল বিক্রয় কার্যক্রম চলে। খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য ট্যাগ অফিসারও নিয়োগ করা আছে।