আড়াইহাজারে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের উদ্যোগ

ফকিরহাটে উচ্চ ফলনশীল গম চাষে আগ্রহ বাড়ছে

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) ও ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বোরো ক্ষেত পরিদর্শন করেন কৃষি কর্মকর্তারা -যাযাদি
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ২০২৫ মৌসুমে ৯১৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. রাসেল মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। প্রকার ভেদে বিভিন্ন জমিতে বিভিন্ন প্রকার জাতের ধান রোপণ করা হচ্ছে বলে অফিস জানায়। এর মধ্যে ২২৫ হেক্টর জমিতে এস এল এইট এইচ, ১২৭ হেক্টর জমিতে দোয়েল জাতের বোরো ধান, এসিআই হাইব্রিড ৬ জাতের ধান ৯৩ হেক্টর জমিতে, কৃষিবিদ হাইব্রিড ১ জাতের বোরা ধান ১০৫ হেক্টর জমিতে, ব্রি- ধান -২৮ জাতের ধান ১২৭৭ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান-২৯ জাতের ধান ১৩১৯ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৫০ জাতের ধান- ২৮৯ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৫৮ জাতের ধান- ৬৬১ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৬৩ জাতের ধান ২৮০ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৬৪ জাতের ধান ৪০ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৬৭ জাতের ধান-২ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৭৪ জাতের ধান ৩৩৩ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৮১ জাতের ধান-৭৮১ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৮৪ জাতের ধান-৬৮ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৮১ জাতের ধান ৭৮১ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৮৮ জাতের ধান ২৫২ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান- ৮৯ জাতের ধান-১৩৯৯ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান- ৯২ জাতের ধান -১১১৯ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ৯৬ জাতের ধান-৩০ হেক্টর জমিতে, ব্রি ধান ১০০ জাতের ধান ৫৬০ হেক্টর জমিতে, বিনা ধান ১৪ জাতের ধান-১৬ হেক্টর জমিতে, বিনা ধান ২৪ জাতের ধান ৭৬ হেক্টর জমিতে, বিনা ধান ২৫ জাতের ধান ৮৫ হেক্টর জমিতে, আমানী বোরো ৫ হেক্টর জমিতে, জাগলি বোরো ১০ হেক্টর জমিতে টেপি বোরো ৮ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। আড়াইহাজার উপজেলার সর্বত্র বোরো ধানের চাষ করা হয়ে থাকে। উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন এবং ২টি পৌর এলাকায় এসব ধানের চাষ করা হয়ে থাকে। এ বছর প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগের কবলে না পড়লে ধানের আশানুরূপ ফলন ঘরে তোলা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপজেলা কৃষি অফিস। ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের ফকিরহাটে উচ্চ ফলনশীল গম চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ গম গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি-৩৩ জাতের গমের চাষ করেছে কৃষকরা। চাষিদের আশা অনুকূল আবহাওয়া থাকলে এবার গমের বাম্পার ফলন হবে। ছাড়িয়ে যাবে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গমের সবুজ পাতার সমারোহ মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে। কিছু গমের শীষ (ছড়া) বের হয়েছে ইতোমধ্যে। অল্প কিছু দিনের মধ্যে গমে শীষে ভরে উঠবে ফসলের মাঠ। বস্নাস্ট রোগের কারণে ফকিরহাটে গম চাষ ছেড়েই দিয়েছিল কৃষকেরা। কিন্তু কৃষি বিভাগের উদ্যোগে আবার তারা গম চাষে ফিরে এসেছেন। চাষিরা কৃষি অফিস থেকে বস্নাস্ট প্রতিরোধী গমের বীজ ও সার পেয়ে গম চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ফকিরহাটের ৮ ইউনিয়নে ৩৫ হেক্টর জমিতে ৮০ জন কৃষক গম চাষ হয়েছে। চাষকৃত জমি থেকে ১৭৫ মেট্রিক টন গম উৎপাদনের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে উৎপাদনের পরিমান ২০০ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে আশা কৃষি বিভাগের। উপজেলার ৪০ জন চাষিকে ৮০০ কেজি উচ্চ ফলনশীল বারি-৩৩ জাতের গমের বীজ, ৪০০ কেজি ডিএমপি ও ৪০০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়েছে। বাকী ৪০ জনকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় বীজ, সার, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রদান করা হয়েছে। রহমান শেখ, শাজাহান সেখ, সোমা বেগমসহ কয়েকজন কৃষক জানান, বেশি শীত ও কুয়াশা কম থাকায় অনুকূল পরিবেশ পেয়ে গমগাছ বেশ হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে। সব ঠিক থাকলে ভালো ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। উপজেলার আট্টাকা গ্রামের চাষি জাহাঙ্গীল আলম জানান, তিনি এক একর জমিতে কৃষি বিভাগের সহায়তায় উচ্চ ফলনশীল বারি-৩৩ জাতের গমের প্রদর্শনী পস্নট করেছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে খেত পরিচর্যা করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাটে এ মৌসুমে বস্নাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও তাপ সহনশীল বারি-৩৩ জাতের গম চাষ হয়েছে। এই জাতটি জিংক সমৃদ্ধ তাই এটি চাষাবাদে মানবদেহে জিংকের অভাব পূরণ হবে। জাতটি উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় কৃষকের আগ্রহও বাড়ছে। চাষকৃত জমিতে চলতি মৌসুমে গমে রোগবালাই তেমন হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা লাভবান হবেন।