সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের মধ্যম চাপড়ায় নদীর বাঁধ ভাঙন থামছে না। নতুন করে ২ দিনে ১০ হাত বাঁধ নদী গর্ভে বিলীন, ২টি বাড়ি বিধ্বস্থ ও ৮টি বাড়ি ভাঙ্গনের হাতছানিতে হুমকিতে পড়েছে। প্রশাসন ও পাউবো জনদাবী উপেক্ষা করায় আজকের এই পরিণতির সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন।
আশাশুনি সদর ও বুধহাটা ইউনিয়নের চাপড়া গ্রামের মধ্যস্থল দিয়ে মরিচ্চাপ নদী প্রবাহিত। নদীর প্রখর স্রোতে চাপড়ার পাড়ে ভাঙতে ভাঙতে শত শত ঘরবাড়ি, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা নদী গর্ভে চলে গেছে। আশাশুনির পাড়ে জেগে উঠেছে বিঘার বিঘার বিঘা জমি। ২০২১ সালে নদী খনন শুরু হলে অন্যান্য এলাকায় সিএস, এসএ ম্যাপ অনুযায়ী মোটামুটি সহনশীল ভাবে নদী খনন কাজ চলে আসলেও চাপড়ার পূর্বপাড়ায় সে নিয়মকে তোয়াক্কা না করে ভাঙন কবলিত নদীকে অটুট রাখার মাধ্যমে গ্রামকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ফলে দিনের পর দিন নতুন নতুন এলাকা ভেঙে যাচ্ছে। নতুন নতুন বাড়ি ঘর নদীতে বিলীন হচ্ছে। এলাকার মানুষ ও ভাঙনের শিকার শত শত নারী পুরুষ প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। ইউএনও ও ডিসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন গ্রামবাসী। ইউএনও, ডিসিসহ পাউবোর কর্মকর্তারা অনেকবার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করা হয়নি।
অন্যদিকে খনন কাজ অব্যাহত রাখায় নতুন নতুন এলাকায় ভাঙন, ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মনিরুল ইসলাম ও মাজেদ সরদারের বসত ঘর নদীতে চলে গেছে। শাহিনুর ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, মফিজুল ইসলাম, মিঠু, মোহাম্মদ আলী, পল্টু, জাকাত ও রমজান আলীর বসতঘর, ল্যাট্রিন, গোয়ালঘর, পানির ট্যাংকি হুমকিতে রয়েছে। গত ২ দিনে ১০ হাত এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক গাছগাছালি নদীতে পড়েছে। ৩০ হাত নদীর গভীরতার পানির প্রখর স্রোতে এলাকার মানুষের হৃদয়কে নির্মম আঘাতে জর্জরিত করলেও সরকারি কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকারীদের হৃদয়ে দরদ আনতে পারছে না।
উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আবু জাহিদ সোহাগ জানান, ভাঙতে থাকা গ্রামকে রক্ষা করতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে ও বাঁধ রক্ষার ব্যবস্থা করে তারপর নদী খনন করা হোক। মানুষের আহাজারী, সহায় সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, তারপরও সেদিকে ভ্রম্নক্ষেপ না করে যেভাবে খনন কাজ করা হচ্ছে, তা কখনই কল্যাণকর হবে না। ম্যাপ অনুযায়ী নদী খননের জন্য তিনি জোর দাবি জানান।