বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

ইতালি যেতে গিয়ে দালাল চক্রের গুলিতে ভাঙার দুই যুবক নিহত

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ইতালি যেতে গিয়ে দালাল চক্রের গুলিতে ভাঙার দুই যুবক নিহত

ফরিদপুরের ভাঙ্গার দুই যুবক ইতালি যেতে গিয়ে দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। এ খবরে শুক্রবার বিকেল থেকে এলাকায় শোকের মাতম চলছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দালালদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। নিহত দুই যুবক হলেন- উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালি গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২২) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে আকাশ হাওলাদার ওরফে রাসেল (২২)।

গত শুক্রবার বিকালে ওই দুই যুবকের অভিভাবক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের সন্তানের গুলিবিদ্ধ লাশের ছবি দেখতে পান। এরপর দুই বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। শনিবারেও স্থানীয় শতশত লোক দুই বাড়িতে ভিড় করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এলাকার শতাধিক লোক দালাল চক্রের বিচারের দাবিতে মিছিল করে।

মজিবর হাওলাদার বলেন, গত ২৩ নভেম্বর তার ছেলে আকাশ হাওলাদার রাসেল ও প্রতিবেশি মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার দালাল চক্রের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা হয়। প্রথমে ঢাকা থেকে দুবাই যায়। এরপর দুবাই থেকে মিশর হয়ে লিবিয়া যায়। এরপর লিবিয়া হয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালির উদ্দেশে তারা রওনা হয়েছে বলে গত ২৪ জানুয়ারি দালাল চক্র জানায়। লিবিয়া থেকে দুই চার ঘন্টায় ইতালি পৌঁছে যাবে বলেও জানায়। গত ২৪ জানুয়ারির পরে পরিবার ছেলেদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেনি। গত ২-৩ দিন ধরে দালাল চক্র তাদের জানায় ওরা হাসপাতালে, আবার কখনও জানায় ওরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। শুক্রবার বিকালে তাদের ফোনে ছবি আসে। ছবিতে একটি সাগরপাড়ে ওদের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়। দালাল চক্র তাদের কাছ থেকে সাড়ে ষোল লাখ করে মোট ৩৩ লাখ টাকা নিয়েছে। এই চক্রই ওই দুই যুবককে হত্যা করেছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।

সন্তান হারানো মিন্টু হাওলাদার ও মজিবর হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, 'কুমারখালি গ্রামেরই আবু তারা মাতুব্বর ও তার ছোট ভাই আনোয়ার মাতুব্বর হচ্ছে দালাল। তারা আমাদের কাছে মোট ৩৩ লাখ টাকা নিয়েছে। টাকা নেওয়ার পর থেকে দালালরা আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকে। দালালের দলে আরও ৫-৬ জন লোক আছে।

শনিবার সকালে গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দালাল আনোয়ার মাতুব্বর ও তার পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। শুক্রবার বিকালেই তারা পালিয়েছে। তবে আবু তারা মাতুব্বর বাড়িতে আছে।

আবু তারা মাতুব্বর বলেন, 'মূলত আমার ভাই আনোয়ার মাতুব্বর তার শ্বশুর বাড়ির এক আত্মীয় (যার বাড়ি বরিশালের মূলাদী) এর মাধ্যমে আমার ছেলেসহ প্রতিবেশি ওই দুইজনকে বিদেশে নেওয়ার কথা বলে টাকা নেয়। আমার ছেলে সোহেল মাতুব্বরও আকাশ ও হৃদয়ের সঙ্গে বিদেশে যায়। আমার ছেলেও নিখোঁজ।'

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ওসি মোকছেদুর রহমান বলেন, এখনও কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে