বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

নবীগঞ্জে যানজটমুক্ত করতে উচ্ছেদ নয়, বাইপাস সড়ক নির্মাণ জরুরি

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
নবীগঞ্জে যানজটমুক্ত করতে উচ্ছেদ নয়, বাইপাস সড়ক নির্মাণ জরুরি

নবীগঞ্জ শহরে তীব্র যানজট মানবজীবনের শুধু দুর্ভোগ নয়, অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিণত হয়েছে সিএনজি, রিকশা ও মিশুক নগরীতে। ফুটপাত চলে গেছে ভ্রাম্যমাণ ও কাঁচাবাজার ব্যবসায়ীদের দখলে। কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাস টার্মিনাল এবং কাঁচাবাজারের জন্য গেস্নাথ সেন্টার যেনো কালের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে। এই যানজট নিরসনে কর্তৃপক্ষ খুবই উদাসিন। দীর্ঘদিন ধরে নেই কোন অভিযান।

পৌর কর্তৃপক্ষ শহরে চলাচলের জন্য প্রায় ৮শ' রিকশা ও মিশুক গাড়ির অনুমতি (নম্বার পেস্নট) প্রদান করলেও শহরে চলাচল করছে প্রায় কয়েক হাজার মিশুক ও রিকশা শহর দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে।

এছাড়া নবীগঞ্জ শহরের ভেতরের মূল সড়কে যত্রতত্র বাস, সিএনজি, ট্রাক দাঁড় করিয়ে যাত্রী-মালামাল ওঠানামা করার ফলে যানজট এখন শহরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী। নির্ধারিত কাঁচামালের দোকানের জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে গোলাথ সেন্টার নির্মাণ করলেও তারা সড়কের উপর দোকান পেতে ব্যবসা করছেন। পানি নিস্কাশন, যানজট লাগবে ও পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্তে শহরে প্রায় ২০ কোটি টাকার ম্যাগা প্রকল্প ড্রেন নির্মিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে নয়ছয় কাজ করে দায়সারাভাবে শেষ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কয়েক মাসের মধ্যেই ড্রেনের উপরের টাইলস ভেঙে যাচ্ছে। শহরের নতুন বাজার আব্দুল মতিন চৌধুরী স্কোয়ার, ওসমানী সড়ক, মধ্যবাজার, জে-কে স্কুল রোডের উপর কাঁচামালের হাট বসে। ফলে রিকশা নিয়ে চলাচলে সমস্যা পোহাতে হয় সাধারণ জনগনকে। নতুন বাজার এলাকায় ওয়ান বাই রোড থাকলেও যানবাহনের চালকরা তা মেনে চলেন না।

নবীগঞ্জ থেকে হবিগঞ্জগামী বাস শহরের নতুন বাজার গাজির টেক (আব্দুল মতিন) স্কোয়ার ট্রাফিক পয়েন্টে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করার ফলে সারাক্ষণ লেগে থাকে তীব্র যানজট। নবীগঞ্জ বাজার থেকে সরকার প্রতি বছর লাখ-লাখ টাকার রাজস্ব পেলেও দৈন্যদশা লাঘবে কার্যত কোন ভুমিকা নেই পৌর কর্তৃপক্ষের।

নবীগঞ্জ পৌর শহরের সালামতপুর পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ হলেও ওই বাস স্টেশন নামে আছে কাজে নেই।

শহরে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল মালিক বলেন, শহরের যানজট সমস্যার সমাধান করতে উচ্ছেদ নয়, একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি। যানজটে আটকে পড়া আজির চৌধুরী নামে এক সিএনজি যাত্রী জানান, নেতাদের ভোট হারানোর ভয়ে ফুটপাত দখলমুক্ত, যানজট নিরসন ও অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে তারা উদাসীন।

যানজটের স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি বাইপাস সড়কের বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান শেফু।

দেখা গেছে হবিগঞ্জ জেলার হবিগঞ্জ সদর, বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জের লোকজন বিভাগীয় শহর সিলেট যেতে চাইলে নবীগঞ্জ হয়ে গেলে প্রায় ২০ কি.মি. রাস্তা কমে। এতে সময়সহ খরচ সাশ্রয় হয়। কিন্তু নবীগঞ্জ শহরে যানজটে পড়ে সব সুবিধা ধুলায় মিশে যায়। ব্যবসা, বানিজ্য ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ অবস্থায় হবিগঞ্জ সড়ক থেকে ছালামতপুর পর্যন্ত একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণে উদ্যোগী ভুমিকা নেওয়া জরুরী।

সুত্রে জানা যায়, প্রায় বছরখানেক আগে তৎকালীন সেতু মন্ত্রনালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম ওই বাইপাস সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে একনেকে পাশও হয়। কিন্তু তাও আলোর মুখ দেখেনি।

নবীগঞ্জ পৌরসভার সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, নবীগঞ্জ শহরের যানজট স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপম দাস অনুপ বলেন, যানজট নিরসনের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে