লিবিয়ার ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে যুবকের মৃতু্য

মরদেহ পেতে পরিবারের আর্তনাদ

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
ইউরোপের ইতালি যেতে লিবিয়া ভূমধ্যসাগর দিয়ে যাত্রা পথে অসুস্থ হয়ে যুবকের মৃতু্যর খবর পাওয়া গেছে। মরদেহ পেতে পরিবারের আর্তনাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত যুবক পৌর শহরের জগন্নাথপুর লক্ষ্ণীপুর এলাকার মাহমুদ হোসেনের ছেলে সুমন মিয়া (৪৫)। লিবিয়া থাকা নিহতের আত্মীয় সানীর মাধ্যমে মৃতু্যর ঘটনাটি নিশ্চিত করেন নিহতের চাচাতো বোন শিল্পী বেগম। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪ মাস আগে ইতালি যেতে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পাড়ি জমান সুমন মিয়া। ২৪ জানুয়ারি মোট ২৫ জন যাত্রী নিয়ে লিবিয়া ভূমধ্যসাগর থেকে একটি বোট যায় ইতালির উদ্দেশে। যাত্রাপথে মাল্টা পৌঁছামাত্র বোটে সমস্যা দেখা দিলে সবাই নেমে গেলেও সুমনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। চারদিন পর স্বজনরা জানতে পারে সুমনের মৃতু্যর খবর। স্থানীয়রা জানান, লক্ষ্ণীপুর এলাকার ২৫-৩০ জন যুবক লিবিয়ায় রয়েছে। কেউ ১ বছর, কেউ ৬ মাস ধরে লিবিয়ায় পড়ে আছে। ৮ লাখ টাকায় কন্ট্রাক হলেও কেউ ১৫ লাপখ টাকা, আবার কেউ কেউ ২০ লাখ টাকা দিয়েও ইতালি যেতে পারছে না। এদিকে ভুক্তভোগীরা দালালদের নাম প্রকাশে ভয় পাচ্ছে। নিহতের বোন শিল্পী বেগম জানান, 'আমার ভাই সুমন বাড়িতে একটি রাইসমিল চালাত। পরিবারের ২ বছরের জমজ ছেলে-মেয়ে ও ১০ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। ধার দেনা করে ১৮ লাখ টাকা খরচ করে ইতালি যেতেই লিবিয়া থেকে ডাঙ্গি দিয়েছিল। প্রথমে দালাল আমাদের বলে সবাই ইতালি পৌঁছে গেছে। ৪ দিন আগে শুনতে পাই আমার ভাইসহ সবাই অসুস্থ ছিল। পরে সুমনসহ দুইজন অসুস্থ হয়ে মৃতু্যবরণ করেছে। আমরা চাই সরকারের সহযোগিতায় যেন আমার ভাইয়ের মরদেহ দেশে ফিরে আসে।' নিহতের স্ত্রী পলি বেগম বলেন, 'শম্ভুপুর শান্তিপাড়া এলাকার সুইটি নামের দালালের মাধ্যমে আমার স্বামী লিবিয়া যায়। কিন্তু সে আমাদের সঙ্গে কোন যোগাযোগ করছে না। ২৩ জানুয়ারি আমার সঙ্গে শেষ কথা হয় সুমনের। সে বলেছিল ইতালি পৌঁছে ফোন দিবে। কিন্তু চারদিন আগে মৃতু্যর খবর পেলেও ২৯ জানুয়ারি রাতে নিশ্চিত হই সুমন মৃতু্যবরণ করেছে। আমার স্বামীর মরদেহ দেশে আনা ছাড়া আমার কিছু চাওয়া নাই।' ইউএনও শবনম শারমিন বলেন, মৃতু্যর বিষয়টি আমি অবগত নয়। তবে যারা অবৈধ পথে গিয়ে মৃতু্যবরণ করে তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করে থাকে প্রশাসন। মরদেহ ফিরে পেতে নিহতের পরিবার আবেদনের প্রেক্ষিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।