গলাচিপার প্রধান সড়ক কেটে স্স্নুইচ গেট, নির্মাণ কাজে ধীরগতি

প্রকাশ | ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী
পটুয়াখালী গলাচিপায় পড়ে থাকা খালের ওপর নির্মাণাধীন স্স্নুইচ গেটের কাজ -যাযাদি
পটুয়াখালী গলাচিপা উপজেলা শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালে নির্মাণ করা স্স্নুইচ গেটের কাজ চলছে ধীর গতিতে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে এলেও স্স্নুইচের কোন অবকাঠামো নির্মাণ এখনও শুরু হয়নি। সম্প্রতি নামমাত্র কাজ শুরু হলেও নির্ধারিত সময়ে তা শেষ হচ্ছে না। এ দিকে শহরের প্রধান সড়কটি গত দেড় বছর যাবত কেটে রাখায় বিকল্প সড়কে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে, এতে করে উপজেলাবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আর এই সংকটের জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ আর ময়লা আবর্জনায় ভাগাড়ে পরিনত হয় গলাচিপা উপজেলা শহরের প্রধান খালটি। 'গলাচিপা খাল' নামে পরিচিত এই খালের পুরাতন স্স্নুইচ গেট অপসারণ করে নতুন একটি স্স্নুইচ গেট এবং খালের দেড় কিলোমিটার এলাকা খনন করে খালের দুই পাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পাউবো। সে অনুযায়ী ৬ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য 'ন্যাচারাল' নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। তবে বাস্তবে স্স্নুইচ গেটের কোন স্টাকচারাল কাজই শুরু হয়নি। এ দিকে পুরাতন স্স্নুইচ গেট অপসারণ করে নতুন স্স্নুইচ গেট নির্মাণের জন্য থানার সামনে থেকে প্রধান সড়কটি গত দেড় বছর ধরে কেটে রাখা হয়েছে। ফলে গলাচিপা উপজেলাবাসীর যেন ভোগান্তির শেষ নেই। স্স্নুইচ গেট নির্মাণ করতে গিয়ে শত বছরের বিভিন্ন পুরাতন স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হয়েছে। এতে অনেক ব্যবসায়ীকেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। স্স্নুইচের পাশের স্থাপনা অপসারণের সময় দ্রম্নত এর নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা বললেও বাস্তবে তা করা হয়নি। উল্টো মাসের পর মাস কাজ ফেলে রাখায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুন। জানতে চাইলে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, সমস্যা সমাধানে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিলেও তা খুব বেশি কাজে আসেনি। এ নিয়ে উপজেলা এবং জেলা উন্নয়ন সমন্ময় কমিটির সভায় অলোচনা হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে গতি ফেরেনি। তবে এর পরও চেষ্টা চলছে কিভাবে দ্রম্নত এই কাজটি শেষ করা যায়। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, বেশ কিছু ম্যাটরিয়াল টেস্টের কারণে সময় লাগছে, তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণেই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে দফায় দফায় ঠিকাদারকে তাগাদা দেয়া হচ্ছে। তবে প্রকল্পের মূল্য না বাড়লেও কাজের সময় আরও বর্ধিত করতে হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একাধিক সূত্র বলছে, যেই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে প্রকৃত পক্ষে তারা কাজটি বাস্তবায়ন করছে না। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। প্রকৃত ঠিকাদারের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।