পটুয়াখালীর লোহালিয়া সেতুর সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ভোগান্তি নিয়েই এ সড়কে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। সড়ক সংস্কারের মাঝ পর্যায়ে থামিয়ে দেওয়ায় ইটের খোয়ায় পুরো এলাকা এখন ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে পরেছে। আশপাশের বাড়িঘর, গাছপালা সবকিছুই ইটের ধুলায় আচ্ছন্ন। তবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ বলছে, আদালতে নিষেধাজ্ঞার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
পটুয়াখালী জেলা শহরের সঙ্গে বাউফল, গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলাসহ সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যাতায়াতের প্রধান সড়ক এটি। যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে লোহালিয়া নদীর ওপর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বছর আগে সেতু নির্মাণ করলেও গত বছর এলজিইডির সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে সড়ক কার্পেটিং করার উদ্যোগ নেয়। লোহালিয়া সেতুর দুই পাড়ে সংযোগ সড়কসহ দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য ৪ কোটি ১২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা চুক্তিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুচ এন্ড ব্রাদার্সের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর ১৪ নভেম্বর সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হবার কথা ছিল। কাজ শেষ না হওয়ায় ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তবে দীর্ঘদিন ধরে সড়করে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখায় সড়ক নির্মাণের ইটের খোয়া গুঁড়ি হয়ে ধুলায় ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে আশপাশের বাসিন্দাদের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তেমনি ধুলার কারণে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। আর সড়কে চলাচলকারী মানুষেরও যেন দুর্ভোগের শেষ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, 'এখন আর বাসা বাড়িতে থাকার কোনো উপায় নেই। সারাদিন ইটের খোয়ার ধুলায় বাসার সবকিছু নষ্ট হয়ে গেছে। ঠিকভাবে তিন বেলা খাবারও খেতে পারি না। সামনের দিনগুলোতে পরিবার নিয়ে কিভাবে এ এলাকায় বসবাস করব তা বলতে পারছি না। এ বিষয় এলজিইডির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা বলছে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।'
লোহালিয়া-কাশিপুর সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী কলেজছাত্র রফিকুল ইসলাম বলেন, 'এই সড়কে একবার চলাচল করলে সাদা শার্ট লাল হয়ে যায়। একদিনের বেশি কোনো পোশাক পরা যায় না। গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের এমন বেহাল অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।' পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন আলী মীর জানিয়েছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে কিভাবে দ্রম্নত সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করা যায় সে বিষয়ে তারা কাজ করছেন। চুক্তি হওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুচ এন্ড ব্রাদার্সের স্থানীয় প্রতিনিধি সেলিম মিয়া বলেন, 'আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে দ্রম্নত সময়ের মধ্যেই সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করতে পারব। সড়কটি কার্পেটিং করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া আছে।' দ্রম্নত সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করে তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের জনদুর্ভোগ লাগবে কার্যকর উদ্যোগ নেবে সরকার- এমনটাই প্রত্যাশা সবার।