বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

ডিউটি না করেই বেতন-ভাতা নেওয়া সেই নার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ডিউটি না করেই বেতন-ভাতা নেওয়া সেই নার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত

নিয়মিত অফিসে না গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগে ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের সিনিয়র নার্স গোলাম মোর্শেদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এমনকি যেসব দিনে তিনি ছুটি (সিএল) কাটিয়েছেন সে দিনের হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষর মিলছে। সেই সঙ্গে ফিঙ্গার প্রিন্ট পর্যবেক্ষণ করে গরমিল পাওয়া গেছে। এর আগে তিনি বিভিন্ন মামলায় জেল খেটেছেন বলে জানা গেছে।

ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন না করে, মাসের পর মাস ডিউটি না করেই বেতন-ভাতা নিচ্ছেন ইসলামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স গোলাম মোর্শেদ। বিষয়টি তদন্ত করতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর গত ২০ নভেম্বর ওই নার্সের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

সূত্রে জানা যায়, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি পরিচালক (অর্থ বাজেট) (অ.দ.) এবং তদন্ত কর্মকর্তা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের জেরিনা আক্তারের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে অধিদপ্তরে তদন্ত কমিটির নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দুইজনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত মঙ্গলবার তদন্তের দিন নির্ধারণ করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেরিনা বেগম। সংশ্লিষ্টদের চিঠির মাধ্যমে জানানো হয় এবং যথারীতি দিনে তদন্ত করা হয়।

জানা যায়, ঢাকায় থাকা অবস্থায় ঘুষ, সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ, চাঁদাবাজি, ভিজিটিং কার্ডে নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি না হয়েও সভাপতি লেখাসহ নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে যোগদানের ১৯ মাস অতিক্রম করলেও, হাসপাতালে দায়িত্ব কর্তব্য ঠিক মতো পালন করেন না।

হাসপাতালের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, অভিযুক্ত নার্স গোলাম মোর্শেদকে বাঁচাতে রেজিস্টার ও ডিউটি রেজিস্টার পরিবর্তনে সহযোগিতা করেছেন হাসপাতালের দুইজন নার্সিং সুপারভাইজার। তারা নতুন খাতা তৈরি করে হাসপাতালের এইচআইভি কর্নারে নার্স গোলাম মোর্শেদ ডিউটি করছেন বলে দেখিয়েছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক দুইজন তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, 'সত্য উদঘাটনের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে কিছু তথ্য প্রমাণও রয়েছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। দুর্নীতি কিংবা অন্যায় করলে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।'

এ ছাড়া শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তাকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। একই বছরের ১২ অক্টোবর ও ৩১ অক্টোবর আবারও দুই দফায় নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের ৪ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়, ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারি থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত দীর্ঘ ১৯ মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে কর্তব্যে অবহেলা প্রদর্শন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ২(খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএএম আবু তাহের বলেন, ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি তার বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেছে। তদন্তের শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে