বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ভোমরা স্থল বন্দরে আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক
ভারতের ঘোষাডাঙ্গা বন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা স্থল বন্দরে প্রবেশ করছে -যাযাদি

সাম্প্রতিক সময়ে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যার সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে রাজস্ব আদায়। ১ ডিসেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত গত তিন দিনে ভারত থেকে এ বন্দর দিয়ে ৭৯৬ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। যেখান থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে ১০.২৯ কোটি টাকা। আর ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৯০৭.৫৮ কোটি টাকা। যেখানে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল মাত্র ৬৩১ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার ৯৭৩ হাজার টাকা।

তবে জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গনঅভু্যত্থানের মধ্যে ব্যবসায়ীরা কিছুটা বিপাকে থাকলেও আমদানি-রপ্তানিতে খুব বেশি নীতিবাচক প্রভাব পড়েনি ভোমরা বন্দরে। বরং বন্দরের ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায়ী সংগঠন সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সার্বিক ও সুষ্ঠ ব্যবস্থা ও শ্রমিক সংগঠনের ইতিবাচক ভূমিকার কারনে আগের চেয়ে বন্দরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোমরা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রহিত ট্রেডাসের স্বতাধিকারী রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী জানান, কোভিট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং পরবর্তী সময়ে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। বিশ্বের অনেক বড় বড় বন্দরে ন্যায় বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থল বন্দর ভোমরা, বেনাপোল ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে মন্দাভাব দেখা দেয়। অর্থনীতে কিছুটা ধাক্কা লাগে। এরপর চলতি বছর জুলাই-আগস্টে দেশে শুরু হয় ছাত্র-জনতার আন্দোলন, যা আগস্টেও অব্যাহত ছিল। ওই সময় আন্দোলন, কারফিউ, বোলাকেডের কারনে আমদানি-রপ্তানিতে কিছুটা অচলাবস্থা হয়। এত সব প্রতিবন্ধকতার পরও ভোমরা স্থল বন্দরে রাজস্ব আদায় তুলনামুলক বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভোমরা স্থল বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল বসর ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুর রাকিব জানান, ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। গত অর্থ বছরের চেয়ে পন্য কম আমদানি হলেও বন্দরের রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৭ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৬ মেট্রিক টন বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়েছে। সেখান থেকে রাজস্ব এসেছে ৫১৯.৭৮ কোটি টাকা। যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৭০১ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হলেও রাজস্ব আদায় হয় ৩৪১.৯০ কোটি টাকা। এ সময়ের মধ্যে গত ৫ মাসে পণ্য আমদানি কম হলেও ১৭৭.৮৭ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে। শুধু গত নভেম্বর মাসে ভোমরা বন্দরের আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যা ৬ হাজার ৫৫২টি, যা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। আর ১ ডিসেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে আমদানিকৃত ২২০টি পণ্যবাহী ট্রাক ভোমরা বন্দরে প্রবেশ করেছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী সংগঠন ভোমরা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ইসুতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বৈরি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তানি নিয়ে অনেকটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক রয়েছে। ওপারের ঘোজাডাঙ্গা সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অচিন্দ কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত মন্ডলের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে পণ্য আমদানিতে কোনো প্রতিবন্ধকতা এখনো সৃষ্টি হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে