ঈদগাঁওয়ে ফসলি জমি থেকে ইটভাটায় মাটি পাচার
৬শ একর ধানক্ষেতে ফলন বিপর্যয়
প্রকাশ | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের শস্যভান্ডারখ্যাত ধনকা বিলে আনুমানিক ৬০০ একর ধানক্ষেতে ফলন বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। গত বর্ষায় টানা বর্ষণ ও ঈদগাঁও নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙনজনিত বন্যার পানি জমে বিলজুড়ে দীর্ঘ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় এসব জমিতে লাগানো ধান গাছ পচে গেছে। এর ফলে এসব ধানক্ষেত বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষক।
বর্ণিত ইউনিয়নের লরাবাক এলাকার কৃষক মো. হোসাইন বলেন, প্রতিবছর ইটভাটায় মাটি কেটে নেওয়ার ফলে একসময়ের উর্বর ধনকা বিল ক্রমাগত নিচু হতে হতে একপ্রকার বিশাল গর্তে পরিণত হয়েছে।
সারা বছর পানি জমে থাকায় ধান উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে এই বিলে। চলতি আমন মৌসুমে রোপণ করা ধানের চারা পানিতে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাথায় হাত দিয়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে ঘুরে দেখা যায় জলাবদ্ধতার ফলে ধান গাছ পচে যাওয়ায় কোটি কোটি টাকা লোকসানের মুখে পড়ছেন গৃহস্থরা।
পালাকাটা গ্রামের মনছুর বলেন, গত ২ দশকেরও অধিক সময় ধরে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। ক্রমাগত মাটি কাটার ফলে বিলের আবাদি জমিগুলো নিচু হয়ে গেছে। বিলের মাঝখানে কিছু জমি স্থায়ীভাবে চাষের অযোগ্য হয়ে গেছে বলেও জানান কৃষকরা।
বাহার ছড়ার চাষি আবুল কালাম বলেন, প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে ইটভাটায় ভয়াবহ আকারে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে গোটা বিল এখন পুকুরের মতো হয়ে গেছে। এর ফলে বিলের দক্ষিণ দিকে অবস্থিত পানি নিষ্কাশনের খাল থেকে বিল নিচু হয়ে গেছে। এতে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে সারা বছর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
পূর্ব ফরাজী পাড়ার কৃষক আবদুর রহিম জানান, এ বছর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত ও মাস দুয়েক আগে নদী ভাঙনজনিত বন্যার ফলে এখনো বিলে পানি জমে আছে। এতে শত শত একর জমির ধান গাছ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন এসব জমির ফসল তোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
ভূমি মালিক জয়নাল বলেন, প্রতিবছর টপ সয়েল কাটার ফলে জমিগুলো নিচু হয়ে গেছে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতায় ডুবে থাকে গোটা বিল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক বিমল কুমার প্রামাণিক বলেন, ব্যাপারটা জানা আছে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।