ডিস সংযোগের টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল, ইন্টারনেটের ভিড়ে এখন আর রেডিও টেপরেকর্ডার কোটচাঁদপুরসহ আশপাশ এলাকায় চোখে পড়ে না বললেই চলে। আগে প্রায় বাড়িতে, চায়ের দোকান, হোটেল রেস্তোরাঁয় রেডিও টেপরেকর্ডার বাজতে শোনা যেত। ডিজিটাল যুগের ছোঁয়া পড়তে না পড়তেই দ্রম্নত এগুলো যেন কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন আর একত্রে দল বেঁধে ছায়া ছবির গানের অনুরোধের আসর, নাটক বা খবর শোনার জন্য কেউ অপেক্ষা করে না। এসব জায়গায় এখন স্থান করে নিয়েছে ডিস সংযোগের টিভি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগবিশিষ্ট মোবাইল ফোন। যে কারণে মান্ধাতার আমলের রেডিও টেপরেকর্ডারের কদর আর নেই। ফলে দ্রম্নতই হারিয়ে যাচ্ছে এসব যন্ত্র। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর হাসপাতাল মোড়ের চা-দোকানি ৬৮ বছর বয়স্ক মোতালেব হোসেন এখনো ধরে রেখেছেন এই ঐতিহ্য।
প্রতিদিন ভোরে তিনি রেডিওতে প্রভাতি বাংলা অনুষ্ঠান চালিয়ে দিয়ে চা বিক্রি শুরু করেন। মাঝে মাঝে সেন্টার পাল্টিয়ে শোনেন বাংলা, হিন্দি, উর্দু গান। সময় হলে ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি'র খবর শোনেন ফুল ভলিউমে। এভাবে চলে ভোর ৬টা থেকে রাত ১১টা বা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। অধিকাংশ ক্রেতারা তাকে এই ঐতিহ্য ধরে রাখায় সাধুবাদও জানান। চা-দোকানি মোতালেব হোসেন বলেন, এখন অধিকাংশ চায়ের দোকানে ডিসের মাধ্যমে টিভি চলে। তাদের কাছে এখন আর রেডিও টেপরেকর্ডারের কদর নেই। আমার কাছে রেডিওতে খবর, বাংলা গান, পুরনো হিন্দি ও ঊর্দু গান চালিয়ে দিয়ে দোকানে কাজ করতে ভালোই লাগে। যে কারণে এটা ছাড়তে পারিনি। তিনি আরও বলেন, এই টেপরেকর্ডারটি আমার কাছে ৩৫ বছর ধরে রয়েছে। এখন আর ফিতা ক্যাসেট না পাওয়ায় ওটা আমি শুধু রেডিও হিসেবে ব্যবহার করি। এখন টেপরেকর্ডার নষ্ট হয়ে গেলে মেরামত করতে বেগ পেতে হয়। কারণ, এখানে তেমন যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আমি যত দিন বেঁচে আছি, টেপরেকর্ডারটি রেডিও হিসেবে থাকবে ততদিন।