শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
দাম নিয়ে আশঙ্কা

সদরপুরে রোপা আমনের ভালো ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে

সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সদরপুরে রোপা আমনের ভালো ফলনেও হাসি নেই কৃষকের মুখে

অগ্রহায়ণ মাস। হেমন্তের সোনালি সকালে এখন রোপা আমন ধানে বিস্তৃত ফসলের মাঠ। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কৃষক ক্ষেত থেকে ক্ষেতেই মাড়াই করা হচ্ছে ধান। কৃষাণী ও পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন বাড়ির উঠানে আগত ধান শুকিয়ে গোলায় ওঠাতে। ধানের উৎপাদন বেশি হলেও এখন কাঙ্ক্ষিত দাম নিয়ে আশঙ্কা বিরাজ করছে কৃষকদের মধ্যে।

ফরিদপুরের সদরপুরে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার পাশাপাশি মৌসুমে জমি তৈরি, ধানের চারা রোপণ, সার প্রয়োগ ও পরিচর্যার কারণে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলনে এ বছর কৃষকের ভাগ্য বদলে যাচ্ছে বলে স্থানীয় কৃষকরা আশা প্রকাশ করেন। কিন্তু বাজারে অন্য জাতের ধান আসলে দাম নিয়ে সংকটে থাকবেন তারা। গত বছরের তুলনায় এ বছর বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ মণ ধান বেশি ফলন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২৯৬ হেক্টর কিন্তু এ বছর ৬৩০০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। উপজেলার ৭শ' কৃষককে প্রণোদনা হিসাবে কৃষি অফিস থেকে ১ কেজি করে ডিএপি, এমওপি সার ও ৫ কেজি ধান বীজ দেওয়া হয়। এছাড়াও পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।

স্থানীয় সাড়ে সাতরশি বাজারের খাদ্য শস্য ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন জানান, গত বছর বাজারে রোপা আমনের চিকন জাতের ধান সরকারি বাজার মূল্য ১২শ' টাকা ধরা হলেও ১২শ' থেকে ১২৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন কৃষক। এ বছর নতুন ধান বাজারে উঠতেই বিক্রি হচ্ছে ১৩শ' থেকে ১৩৫০ টাকা মণ।

ঢেউখালী ইউনিয়নের বাবুরচর কাচারীডাঙ্গী গ্রামের কৃষক আ. রব মাতুব্বর বলেন, এ বছর তার প্রায় ১০ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ হয়েছে। সার ও কীটনাশক ও পরিচর্যার কারণে ফলন ভালো পেয়েছেন। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর ৩ থেকে ৪ মণ ধান বিঘাপ্রতি উৎপাদন বেশি। গত বছরের চেয়ে এবার বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ৪ মণ ধান বেশি হয়েছে। কিন্তু এখন বাজারে যদি ধানের মূল্য নেমে যায় তাহলে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

সদরপুর ইউনিয়নের ৯ রশি গ্রামের কৃষক রাজা মিয়া জানান, ৪২ শতাংশের এক বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষের জন্য বিভিন্ন ধরনের একশ' কেজি সার, কীটনাশক ৪ কেজি বাবদ ৬ হাজার ও ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিকের মূল্য ১০ হাজার, ক্ষেতের পানি বাবদ ২ হাজার। সব মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতে খরচ হয় ১৮ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন হয় ২০ থেকে ২৫ মণ। সদরপুরে ব্রি-৮৭ জাতের ধান বেশি চাষাবাদ হয়ে থাকে।

সদরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, রোপা আমনের চারা গাছ লাগানোর পর থেকেই এক ধরনের পোকা আক্রমণ করে থাকে। সেই পোকার হাত থেকে চারা ধান রক্ষা করতে কৃষকদের জমির আগাছা ও স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও সরকারিভাবে প্রণোদনা হিসাবে কৃষকদের সার ও বীজ দেওয়া হয়ে থাকে। এ বছর ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এখন বাজার ভালো পেলে কৃষক উপকৃত হবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে