নীলফামারী সাবরেজিস্ট্রার অফিস যেন অনিয়মের আঁতুরঘর

প্রকাশ | ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী
অনিয়মের আতুরঘরে পরিণত হয়েছে নীলফামারী সাবরেজিস্ট্রার অফিস চত্বর। হেন অনিয়ম আর হয়রানি নেই এখানে হয় না। পদে পদে অনিয়ম আর হয়রানির শিকার হচ্ছেন জমি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই। নানা টালবাহানা, সমিতির নামে চাঁদা আদায় আর দলিল লেখকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন আগন্তুকরা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, গত ৭-৮ বছরে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিভিন্নভাবে। দলিল লেখক সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। সমিতির নামে অযাচিতভাবে জমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা ছাড়াও জাল খাজনা-খারিজ ও ভুয়া খতিয়ান প্রস্তুত করে জমি রেজিস্ট্রির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সমিতির কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্যের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে এ কাজে জড়িত। শুধু তাই নয়, নীলফামারী সদরের প্রতিটি মৌজাভিত্তিক দোলা, ভিটা, বসত ভিটা, ডাঙ্গা, বালু পতিত, বাঁশঝাড়, ডোবা ও বাণিজ্যিক শ্রেণির জমির আলাদা আলাদা মূল্য সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করা থাকলেও দলিল লেখক সমিতির নেতারা সাবরেজিস্ট্রারদের সঙ্গে যোগসাজশে খতিয়ানে থাকা জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছেন। এভাবে ডাঙ্গা জমিকে দোলা, বসতভিটাকে পতিত শ্রেণিতে রূপান্তরিত করে ভুয়া খতিয়ান প্রস্তুত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময় ২০১৮ সাল থেকে এখন পযন্ত কোটি কোটি টাকা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চক্রটি পকেট ভারী করেছে। একই সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে ২০০০ সালের শেষ পর্যন্ত সম্পাদিত বেশির ভাগ দলিলই ভুয়া খারিজ খতিয়ানে করা হয়েছে। সূত্রটি সাংবাদিকদের জানায়, নাম গোপন রাখতে পারলে, শুধু দলিল নম্বর নয়, তারিখ বার পর্যন্ত দেওয়া যাবে। কয়েকজন দলিল লেখক জানান, সমিতির অনেক নেতাই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। যাদের কিছুই ছিল না, তারা এখন একাধিক বাড়ি-গাড়ি, প্রচুর জমিজমার মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া সমিতির নামে আদায়কৃত টাকা নিয়েও হচ্ছে হরিলুট কারবার। অনিয়মের কারণে সমিতির সাবেক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলাও হয় বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ক্ষমতাচু্যত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে দলিল লেখক সমিতিকে কুক্ষিগত করে রাখা আওয়ামী মদদপুষ্ট দলিল লেখকরা এখনো বহালতবিয়তে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এদিকে ভুক্তভোগিরা জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সময় সমিতির নামে চাঁদা আদায়সহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।