ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে আটজনের কারাদন্ড

ইট-ভাটা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার

প্রকাশ | ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
চার জেলায় অভিযান পরিচালনা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় নানা অপরাধে আটজনকে কারাদন্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে ধ্বংস ও কোটি টাকার সরকারি সম্পদ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত- আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, আটঘরিয়ার দুই প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকার জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে আটঘরিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা মুস্তারী অভিযান চালিয়ে একদন্ত ইউনিয়নে পাটকাঠি (সোলা) থেকে কার্বন তৈরির জয়া কোম্পানি এবং ক্যাপ্টেন চারকোল ইন্ডাস্ট্রি নামের দুই প্রতিষ্ঠানকে এই জরিমানা করা হয় এবং বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তাদের প্রতিষ্ঠানের তালা বন্ধ রাখা নির্দেশ দেওয়া হয়। জানা গেছে, উপজেলা একদন্ত ইউনিয়নের চকচৌকিবাড়ি পরানপুর গ্রামের পাটকাঠি থেকে কার্বন তৈরির কারখানা এবং বেলদহ গ্রামের ক্যাপ্টেন চারকোল ইন্ডাস্ট্রিজের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় প্রতিষ্ঠানের মালিক ইমরানকে ১০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাবনা জেলা এনএসআই'র অভিযানকালে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আব্দুল মমিন উপস্থিত ছিলেন। সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার) প্রতিনিধি জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তিতাস নদের পাড়ে গড়ে ওঠা একটি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় দুইজনকে ১০ দিনের কারাদন্ড দেন আদালত। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গত মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনা করেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসাইন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সিরাজুম মনিরা। অবৈধভাবে ইটভাটা ও ইট প্রস্তুতের অভিযোগে ভাটা ভাড়া নেওয়া জমির হোসেন (৪৫) ও তার বড় ভাই নবী হোসেনকে (৪৮) বিনাশ্রম ১০ দিনের কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ইটভাটার মালিক সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলি আজাদ। বর্তমানে তিনি একটি হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। ভাটাটি ভাড়ায় চালাচ্ছেন জামির হোসেন। শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি জানান, শেরপুরের শ্রীবরদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার ভোরে সীমান্তবর্তী সিংগবরুণা ইউনিয়নের কর্ণঝোড়ার ঢেউফা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পরিবহণ ও ব্যবসায়ের কাজে জড়িত থাকার অপরাধে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আকবর আলীকে (৫০), ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪০ দিনের কারাদন্ড এবং ওয়াদুল আলী (২৪), জাহিদুল (৪০), রুবেল মিয়া (২৫), সাইদুলস্নাহ (২৫) ও রাজু মিয়া (২০) প্রত্যেককে ৩ মাসের করে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ জাবের আহমেদ। এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদুল হকসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স উপস্থিত ছিলেন। কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় জবরদখলকৃত কোটি টাকার সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। আদালতের রায়ের পর গত মঙ্গলবার বিকালে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ জহুরুল হোসেনের উপস্থিতিতে অবৈধ দেয়াল ভেঙে সরকারি এ জায়গা উদ্ধার করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ জহুরুল হোসেন জানান, উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের উত্তর কুলাউড়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে মোস্তফা চৌধুরী নামের এক ব্যক্তি সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবহার করে আসছিলেন। কিছুদিন আগে দখলকৃত সেই জায়গায় দেওয়াল নির্মাণ করে আদালতে মামলাও করেন তিনি। গত মঙ্গলবার আদালত সরকারের পক্ষে রায় দিলে বিকালে ঐ দেয়াল ভেঙে প্রায় কোটি টাকা মূল্যে ৩৩ শতক সরকারি জায়গা উদ্ধার করা হয়। এ সময় জয়চন্ডী ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কামরুন নাহার এবং কুলাউড়া থানার এএসআই ইমদাদসহ পুলিশের একটি দল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সহযোগিতা করেন।