বগুড়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় থমকে আছে অর্থোপেডিক হাসপাতাল

প্রকাশ | ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

বগুড়া প্রতিনিধি
গত ১৫ বছরের আওয়ামী রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় উন্নয়নবহির্ভূত ছিল বগুড়া। এখানে অনেক কিছু থেকেও যেন কিছুই নেই। এ রকম উলেস্নখযোগ্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার মধ্যে রয়েছে অর্থোপেডিক হাসপাতাল। কারণ, বগুড়ায় রয়েছে আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর। বগুড়া, জয়পুরহাট, নওগাঁ ও গাইবান্ধা জেলার কার্যালয় এটি। এখানে অবকাঠামো ও পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও নেই উলেস্নখযোগ্য কার্যক্রম। বগুড়ার এ কার্যালয় কয়েক লাখ শ্রমিকের দপ্তর হলেও সুবিধা থেকে বঞ্চিত এই অঞ্চলের মানুষ। বিভিন্ন সময় নানা ধরনের বড় দুর্ঘটনায় শ্রমিকরা আহত কিংবা অঙ্গহানি হলে চিকিৎসা নিতে যেতে হয় ঢাকায়। অর্থাৎ গত কয়েক বছর আগে অর্থোপেডিক হাসপাতালের কার্যক্রম হাতে নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ২০২১ সালের শেষের দিকে শ্রম অধিদপ্তরের সালিশি শাখা থেকে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। দপ্তরের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়, আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর বগুড়া কর্তৃক আয়োজিত অংশীজনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় গোটা উত্তরবঙ্গের শ্রমজীবী মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, এ অঞ্চলের মানুষের জন্য ৫০ শয্যাবিশিষ্ট একটি বিশেষায়িত/অর্থোপেডিক হাসপাতাল তৈরির প্রকল্প করা যেতে পারে। সে অনুযায়ী প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয় এবং এ-সংক্রান্ত কার্যক্রমটি চলমান থাকে। দপ্তরের ৪০.০২.০০০০.০৩৫.১৬.০০৩.১৪.৪৫৩. /১(৩) নং স্মারকের চিঠিটি সদয় অবগতি ও কার্যার্থে পাঠানো হয়েছিল ১। পরিচালক, পরিচালকের দপ্তর, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, রাজশাহী ২। পরিচালক, পরিচালক (পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও তথ্য প্রযুক্তি) শ্রম অধিদপ্তর ৩। অফিস কপি, শ্রম অধিদপ্তর প্রধান কার্যালয় ঢাকা বরাবর। সেইসঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু বৈষম্যতার কারণে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। এ কারণে হাসপাতালের প্রকল্পটি ছাড়াও আরও কয়েকটি কাজের অগ্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। বগুড়া আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের আওতায় প্রায় ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত প্রায় ৩ লক্ষাধিক শ্রমিকসহ প্রায় ৫০ লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছে। এছাড়া বগুড়ায় একটি অর্থোপেডিক হাসপাতাল হলে ১৪ জেলার মানুষ ঢাকায় না গিয়ে বগুড়া থেকেই চিকিৎসা নিতে পারবেন। এতে একদিকে কমবে ঢাকা অর্থোপেডিক হাসপাতালের ওপর চাপ, অন্যদিকে প্রায় অর্ধেকেরও কম ব্যয়ে সেবা নিতে পারবেন উত্তরের মানুষগুলো। বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল বাড়ি এরশাদ বলেন, বগুড়ায় একটি অর্থোপেডিক হাসপাতাল অতীব জরুরি। অর্থোপেডিক হাসপাতাল হলে উত্তরের মানুষদের আর ঢাকা যেতে হবে না। বিশেষ করে শ্রমিকরা অনেক সুবিধা পাবেন। বগুড়া আঞ্চলিক শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন্স মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান বলেন, 'বিগত সরকারের আমলে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ায় একটি অর্থোপেডিক হাসপাতালের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা আবারও একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। দ্রম্নত কার্যকর হলে বগুড়াসহ উত্তরের মানুষ অনেক সুবিধা পাবেন।'