বিদ্যালয়ে না গিয়েও এমপিওভুক্ত হতে চলেছেন হেলাল উদ্দীন!
প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের মণিরামপুরে এক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী নিয়োগ প্রাপ্তির ১১ মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকেও এমপিওভুক্ত হতে চলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিলের জন্য শিক্ষামন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেছে এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে স্কুল এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন সভাপতি চঞ্চল ভট্টাচার্য্য এবং প্রধান শিক্ষক মশিয়ূর রহমানকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে উপজেলার বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি নেন হেলাল উদ্দীন। কিন্তু আজ অবধি বিদ্যালয়ে যাননি। তবে এলাকায় গুঞ্জন চলছে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের চাচাতো ভাই নেহালপুর কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ চঞ্চল ভট্টাচার্য্য হেলাল উদ্দিনের কাছে ১২ লাখ টাকা নেন। এর পর গোপনে ৩ জানুয়ারি নিয়োগ বোর্ড করে বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি দেন।
অভিযোগ রয়েছে, মণিরামপুরের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে হেলাল উদ্দীনের এ নিয়োগ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো লবিং-গ্রম্নপিং ক্রমেই জোরাল হতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি এলাকাবাসীর তোপের মুখে স্কুলে আসতে পারেননি। ফলে ১১ মাস প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেন।
গত ৬ নভেম্বর এলাকাবাসী হেলালের অফিস সহকারী পদের নিয়োগ বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন খোঁজ নিতে বাজিতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গেলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান তরুণ কান্তি হালদার জানান, অফিস সহকারী পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন কোনো কাগজপত্র তার হাতে বা অফিসে নেই। এমনকি হেলাল উদ্দিন নামে কোনো ব্যক্তিকে আজ অবধি স্কুলে শিক্ষকমন্ডলী কেউ দেখেননি।
এদিকে, নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ডিসেম্বর মাসে নভেম্বরের যে এমপিও আসছে, সেই এমপিওতে হেলাল উদ্দিন বেতনভুক্ত হতে চলেছেন।
হেলাল জানান, অফিস সহকারী পদে গত ১১ মাস আগে নিয়োগ পান। রাজনৈতিক জটিলতার কারণে বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। তবে, এমপিওভুক্তির জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে কাগজপত্র পাঠানোর বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেছেন।
অন্যদিকে, হেলাল উদ্দিনের নিয়োগের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাংবাদিকের হাতে আসলেও, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তরুণ কান্তি হালদার অফিস সহকারী হেলাল উদ্দিনের নিয়োগের বিষয়টি লিখিতভাবে না বলছেন।
মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন বলেন, হেলালের বেতনভুক্ত হওয়ার জন্য দুই মাস আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়েছে। তার অনুপস্থিতির বিষয়টি ইতোমধ্যে শুনেছেন। অতিদ্রম্নত তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।