ফেনীর দাগনভূঞার একটি আমন ক্ষেত -যাযাদি
ফেনীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দাগনভূঞা উপজেলার কৃষকরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। বন্যায় ধান, সবজি বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে আমন আবাদে লক্ষ্যমাত্রারা ৯০ শতাংশই ঘাটতি রয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর সেই জমিতে দেরিতে হলেও রোপা আমন চাষ করে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন কৃষকরা। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষক পরিবার বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করছেন। দ্রম্নত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে জানান প্রান্তিক কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় রোপা আমনে ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কিন্তু বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি কারণে অর্জন মাত্র ৮০০ হেক্টর। দাগনভূঞা উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় কৃষি বিভাগের ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৮৫০ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পস্নাবিত হয়েছে ৯৩৪ হেক্টর ফসলি জমি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন উপজেলার ১০ হাজার ৩৫৩ জন কৃষক। এরই মধ্যে আউশ আবাদ করেছেন ৯২০ জন কৃষক, আমন বীজতলা করেছেন ৭ হাজার ৫৪৩ জন, আমন আবাদ ৬৫০ জন, শরৎকালীন সবজি ১ হাজার ১৮৫ জন, ফলবাগান ৪৫ জন ও আদা চাষ করেছেন ১০ জন কৃষক। এছাড়া শীতকালীন সবজির বীজ, সার, নগদ প্রণোদনা বিতরণ, ধানবীজ, বিভিন্ন শষ্য বিতরণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের বাতশিরি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কৃষকরা জমি ধানের পরিচর্যা ব্যস্ত সময় পার করছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করেছে কৃষকরা। কৃষক মহিন উদ্দিন ৩০৬ শতক, একরাম উদ্দিন ১৩২ শতক, ইদ্রিস ১২০ শতক, আবদুর ছোবহান ৭২ শতক, মীর আহাম্মদ ৬০ শতক, বিবি মরিয়ম ৬০ শতক, আবু ইউছুফ ৬৫ শতক, নুরুল আমীন বাচ্চু ৫৫ শতক জয়নাল আবেদীন ৫০ শতক সানোয়ারা বেগম ৪৮, বিষ্ণু চন্দ্র ভৌমিক ৩৬ শতক ও কালন ৩০ শতক জমিতে ব্রি ধান ৯৫, ৪৯ ও ৮৭ জাতের ধান আবাদ করেছেন।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বন্যা পরবর্তী কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ধানের চারা বিতরণ করা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদী ব্রি ধান ৯৫ জাত রোপণের ১২০ দিন পর কর্তন করা যায়। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান কর্তন করা যাবে। মাঠে গিয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, বন্যায় কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় থেকে ধানের চারা সংগ্রহ করে কৃষকদের বিতরণ করা হচ্ছে।