বাবা-মা ও স্ত্রীর সামনে যুবককে পিটিয়ে আহত
প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রামে বৃদ্ধ বাবা-মা ও গর্ভবতী স্ত্রীর সামনে উজ্জল কুমার মন্ডল (২৫) নামে এক যুবককে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শুক্রবার সকালে আতিকুর রহমান পিয়াস নামে একটি আইডি থেকে ওই ভিডিটি আপলোড করা হয়।
সেখানে লেখা হয় 'নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের উজ্জল কুমার মন্ডলকে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থন করায়, বাড়িতে গিয়ে বৃদ্ধ পিতা-মাতা ও অন্তঃসত্তা স্ত্রীসহ সবাইকে বেধরক পিটিয়েছে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বনপাড়া পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি জালাল ভূইয়া ও যুবদল নেতা জাহাঙ্গির তাকে বার বার গলা করার কথা বলছে। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে অন্যায়ভাবে কোনো মামলা না থাকার পরও পুলিশের হাতে তুলে দেয় সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে ওই যুবক পুলিশ হেফাজতে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তার পরিবারকে তারা বারবার এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছে। এদের বিচার কি কখনো এই বাংলার মাটিতে হবে??'
অনুসন্ধানে জানা যায়, উজ্জল কুমার মন্ডল উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর শশ্বানঘাট এলাকার সবজি ব্যবসায়ী বিশ্বনাথ মন্ডলের ছেলে। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছসেবক লীগের সেক্রেটারী আতিকুর রহমান পিয়াসের সঙ্গে চলাচল করতেন। এটাই ছিল তার অপরাধ।
৫ আগস্ট আত্নগোপনে যান। অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাবেন বলে বুধবার দুপুর বাড়িতে ফেরেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এবিএম ইকবাল হোসেন রাজুর অনুসারী শ্রমিকদল নেতা জালাল ভূইয়া, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম, নুর আলম, নাজমুল, ছাত্রদলনেতা সুজন, শুভসহ ৭-৮ জনের একটি দল লাঠি-সোটা নিয়ে ওই বাড়িতে যান। সবার সামনে উজ্জল মন্ডলকে বেধরক পেটাতে থাকেন। এ সময় তার বৃদ্ধ বাবা বিশ্বনাথ মন্ডল ও মা ছায়া রাণী তাকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাদেরও ধাক্কা-মারপিট করেন। তার অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। উজ্জল মন্ডল অচেতন হয়ে গেলে তাকে বসিয়ে মাথায় পানি দিয়ে চেতনা ফেরান। এরপর থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে ১৫১ ধারায় আটক দেখিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নাটোর আদালতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে জামিনে বাড়িতে ফেরেন বৃহস্পতিবার সন্ধায়।
এখন তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী। আর কোন মন্তব্য করতে বা সাংবাদিকদের সাথে দেখা করতে রাজি হচ্ছেন না উজ্জলের পরিবার।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা খবর পেয়ে উজ্জলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এরপর তাকে ১৫১ ধারায় কোর্টে চালান দেওয়া হয়।'