বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২

সালথায় পান ও লাখাইয়ে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ বাড়ছে

স্বদেশ ডেস্ক
  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
সালথায় পান ও লাখাইয়ে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ বাড়ছে

ফরিদপুরের সালথায় পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। ইতোমধ্যে ৩০ বিঘা জমিতে পান চাষ হয়েছে। এদিকে, হবিগঞ্জের লাখাইয়ে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ করা হচ্ছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট-

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের সালথায় পাট, পেঁয়াজ ও ধানসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পান চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা। এ বছর উপজেলার বলস্নভদি ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া ও রাজনগর গ্রামে ৩০ বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। পান চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন অনেকে। পান চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই নতুন করে পানের বরজ তৈরি করছেন। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ চাষিদের থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন নতুন চাষিরা। এছাড়া, জটিল বিষয়ে কৃষি অফিসেও যাচ্ছেন তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পাটখড়ি দিয়ে ঘেরা জমির মধ্যে সারি সারি পান গাছ। গাছে ঝুলছে সবুজ রংয়ের মিষ্টি পান। এখনো ঘনকুয়াশা ও তীব্র শীতের প্রভাব পড়েনি পানের বরজে। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে পানের দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে গেল বছরের চেয়ে এই বছরে পানের বাজারে দাম দ্বিগুণ।

বলস্নভদি ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামের পান চাষি সজীব চক্রবর্তী, অসিত সাহা, পরিমল মন্ডল ও বিপুল কর বলেন, 'কয়েক বছর ধরে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি পান চাষ করে আসছি আমরা। নিজেদের বরজে নিজেরাই সব কাজ করি। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পান পরিচর্যা করি। কয়েকটি বরজে ছেচি, ঝুট্টা ও হাইব্রিডসহ কয়েক জাতের পান আছে। এ বছর কিছু কিছু বরজে পানের ফলন ভালো হয়েছে। আবার অনেকেরই অর্থের অভাবে ভালো করতে পারেননি। কয়েকজন চাষির বরজের পানে ডিম পোকা দেখা যাচ্ছে। তবে এ বছর এখনো কুয়াশা ও শীত না থাকায় তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি পানের।'

উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জামিনুর সাঈদ বলেন, 'বলস্নভদি ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া ও রাজনগর গ্রামের একাধিক চাষি পান চাষ করেছেন। আমরা নিয়মিত পানের বরজ পরিদর্শন করছি। সেই সঙ্গে চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছি।'

সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার বলেন, 'উপজেলার বলস্নভদি ইউনিয়নে এ বছর ৩০ বিঘা জমিতে পানের বরজ রয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব পড়েনি পানের বরজে। এখনো পান খুব ভালো আছে। সার খৈল ও স্প্রেসহ পানের পরিচর্যায় নানা পরামর্শ দিচ্ছি। সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা আসলে কৃষকদের দেওয়া হবে।

লাখাই (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কৃষিভান্ডার খ্যাত হবিগঞ্জের লাখাইয়ে প্রথমবারের মতো কৃষিতে রিলে পদ্ধতিতে আমন ধান আবাদের পর সাথী ফসল হিসেবে সরিষা আবাদ করছেন কৃষক।

তথ্য অনুযায়ী, রোপা বা বোনা আমনের জমিতে ধান কাটার ১০-১৫ দিন আগে সরিষা বীজ বপন বা ছিটিয়ে সরিষা আবাদ পদ্ধতিকে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ বলা হয়ে থাকে। রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষে জমিতে কর্ষণের প্রয়োজন পড়ে না। বিধায় এ পদ্ধতিতে নতুন করে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। যে সব জমি রোপা আমন বা বোনা আমন পরবর্তী সময়ে বোরো আবাদ হয় না এবং মৌসুমি অনাবাদি থাকে সে জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ করা যায়। এছাড়া যে জমিতে কর্তনকালীন সময়ে পানি জমে থাকে না এবং জমিতে কাদা থাকে তাতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ সহজেই করা যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উলিস্নখিত পদ্ধতিতে লাখাইয়ে বারি-১৪, বারি-১৭, বারি ১৮ এবং বিনা-৯, বিনা-১১ আবাদ হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান মিজান বলেন, লাখাইয়ে উলেস্নখযোগ্য পরিমাণ জমি আমন পরবর্তী সময়ে বোরো আবাদ হয় না এবং তা মৌসুমি অনাবাদি থাকে। এসব জমিতে সরিষাসহ বিভিন্ন রবিশস্য আবাদ করা যায়। এ লক্ষ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমন পরবর্তী সময়ে বিনা চাষে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ করতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে