বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

কুষ্টিয়ায় মা ও শিশু হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃতু্যদন্ড

নড়াইলে হত্যা মামলায় ৫ জনের ও জামালপুরে ধর্ষণের অভিযোগে একজনের যাবজ্জীবন
স্বদেশ ডেস্ক
  ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কুষ্টিয়ায় মা ও শিশু হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃতু্যদন্ড

কুষ্টিয়ায় চুরি করতে দেখে ফেলায় মা ও শিশু হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃতু্যদন্ড দিয়েছেন আদালত। এদিকে, নড়াইলে হত্যা মামলায় ৫ জনের ও জামালপুরে কন্যাশিশু ধর্ষণের অভিযোগে একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানায় মা ও শিশু হত্যা মামলায় ৩ চোরের মৃতু্যদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত- ১ এর বিচারক সোহানী পূষণ আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। একইসঙ্গে আসামিদের প্রত্যেকের পৃথকভাবে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- দৌলতপুর উপজেলার জোয়াদ্দার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা সেকেন্দার মোল্যার ছেলে হানিফ মোল্যা (৩২), সোনাইকান্দি গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন মন্ডলের ছেলে আলী আকবর (৩২) এবং সোনাইকান্দি গ্রামের শহিদুল মন্ডলের ছেলে লালচাঁদ মন্ডল (৩২)। এরা সবাই পেশাদার চোর চক্রের সদস্য বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৭ থেকে ১৮ নভেম্বর দৌলতপুর উপজেলার সোনাইকান্দি গ্রামে মানিক মিয়ার বাড়িতে গভীর রাতে চুরি করতে যান সাজাপ্রাপ্তরা। এ সময় মানিক মিয়ার স্ত্রী ছানোয়ারা বেগম (৪৮) ঘুম ভেঙে তাদের দেখে ফেলায় চোরেরা তাকে গলায় মাফলার পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে এবং মাকে হত্যার দৃশ্য দেখে ফেলায় শিশু রাজকে (৮) গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে উপজেলার শীতলাইপাড়া গ্রামের তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী পারভীনা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামাদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর দৌলতপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক নিশিকান্ত সরকার ৩ জনের বিরুদ্ধে চুরি সংগঠন ও হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

নড়াইল প্রতিনিধি জানান, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় শিশু শাহিন ফকির হত্যা মামলায় পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও পাঁচ বছর বিনাশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শাজাহান আলী এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলার নলদী ইউনিয়নের কালাচাঁদপুর গ্রামের শিমুল মলিস্নক (শিমুল মুন্সি), সৈয়দ লিটন, জাহিদুর রহমান মিঠু, সৈয়দ জাহাঙ্গীর এবং শামিমা বেগম। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আজিজুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শাহিন ফকির (১০) নিখোঁজ হয়। পরে ৩০ সেপ্টেম্বর, তার পচা-গলা মরদেহ উদ্ধার হয় উপজেলার কালাচাঁদপুর গ্রামের একটি পুকুরপাড়ের ময়লা আবর্জনার গর্ত থেকে। এ সময় অভিযোগ করা হয়, জমি নিয়ে বিরোধের কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় শাহিন ফকিরের চাচা মিজানুর ফকির ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর লোহাগড়া থানায় মামলা করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর আদালত পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং জরিমানা করেন।

জামালপুর প্রতিনিধি জানান, জামালপুরে কন্যাশিশু ধর্ষণের অভিযোগে শহিদ মিয়া নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যানাল আদালত।

বুধবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনাল ২ এর বিচারক শহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল আমিন শামীম জানান, গত ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল ভোরে মেলান্দহ উপজেলার দিলালেরপাড়া গ্রামের আছাদুলস্নাহ ও তার স্ত্রী তাদের সাত বছর বয়সি কন্যাশিশুকে ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে বাড়ির বাইরে ধান সিদ্ধ করছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী শহিদ ওই শিশুকে ঘুমন্ত অবস্থায় জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি তার বাবা-মাকে জানালে ওইদিনই শিশুর বাবা আছাদুলস্নাহ মেলান্দহ থানায় মামলা করেন। গত ২০১৮ সালের ১২ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলায় দশ জন সাক্ষীর সাক্ষের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে ধর্ষণের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া শেষে বুধবার এ রায় দেন আদালত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে