মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পলো দিয়ে মাছ ধরা উৎসবে বিভিন্ন এলাকায় থেকে আসেন সৌখিন মাছ শিকারিরা -যাযাদি
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার দিয়ারবিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পলোবাইচ। গত সোমবার এই মাছ ধরার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। দল বেঁধে বিলে মাছ ধরতে নামেন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নানা শ্রেণি-পেশার প্রায় দেড় শতাধিক সৌখিন মাছ শিকারি। বাঁশের তৈরি পলোর পাশাপাশি ধর্মজালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ নিয়ে বিলে নেমেছিলেন তারা। তবে, আশানুরূপ মাছ পাননি কেউ। মাছ ধরা দেখতে বিলের পাড়ে ভিড় করেন স্থানীয় মানুষ। পলো দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে পলোবাইচ নামে পরিচিত।
পলো বাইচে আসা কয়েকজন সৌখিন মাছ শিকারি বলেন, পলো বাইচের আগে সৌখিন মাছ শিকারিরা নিজেরা মাছ ধরার একটি দিন নির্ধারণ করেন। এরপর মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিচিত অন্যদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া, আশেপাশের হাট-বাজারেও জানিয়ে দেওয়া হয় পলো বাইচের সময়। নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে হাজির হয়ে যান মাছ শিকারিরা।
ঘিওর উপজেলার হেলাচিয়া থেকে পলো ও ধর্মজাল নিয়ে দিয়ারবিলে মাছ ধরতে এসেছেন সৌখিন মাছ শিকারি রফিক। তিনি বলেন, 'আজ নয়ারহাট গোপীনপুরে পলোবাইচ ছিল। সেখানে অংশ নিয়ে দিয়ারবিলে মাছ ধরতে এসেছি। ছোট ছোট ছয়টি মৃগেল মাছ পেয়েছি। তবে, মাছ পাওয়া না পাওয়া বড় কথা নয়। শখের বসে পলো বাইচে আসি, আনন্দটাই আসল।' উপজেলার নারিকাটি থেকে আসা রহিম মোলস্না বলেন, 'আমি একটি নওলা ও দুইটি মৃগেল মাছ পেয়েছি।'
হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী শিবালয়, ঘিওরসহ ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকেও এসেছেন অনেকে। এদের সবাই সৌখিন মাছ শিকারি। শখের বসে মাছ ধরার আনন্দ নিতে অংশ নেন তারা।
পলো বাইচ দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় অনেক উৎসুক লোকজন। এদের একজন ষার্টোর্ধ্ব রহম আলী। তিনি বলেন, আগে এই বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। বিলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো অনেকে। এখন আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নুরুল ইকরাম বলেন, পলোবাইচ গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। দিয়ারবিলে প্রতিবছরই মৎস্য দপ্তর থেকে পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এবছরও আমরা বিলে ৫০ কেজি পোনা মাছ অবমুক্ত করেছি।