অভু্যত্থানের স্মৃতি তুলে ধরে কাল ঢাবিতে 'লাল মজলুম'
প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি রিপোর্ট
জুলাই গণ-অভু্যত্থানের স্মৃতি তুলে ধরে রাজধানীর রাজপথে আসছে 'লাল মজলুম' নামে রাজপথ-গণপরিবেশনা। গণ-অর্থায়নে এ আয়োজন করা হবে। আগামীকাল শনিবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হবে এই পরিবেশনা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনের (টিএসসি) অতিথি কক্ষে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেল করেন আয়োজকরা। এই গণপরিবেশনার ভাবনা, পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. শাহমান মৈশান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'এই পরিবেশনায় ওরস সংস্কৃতির গান, অভু্যত্থানের মিছিল, রাষ্ট্রীয় ও সংকীর্ণ সেক্টারিয়ান সন্ত্রাস, নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার বিভিন্ন আঞ্চলিক বাংলা ও চাকমা ভাষায় গণরূপায়ণ, রবীন্দ্র-নজরুল কাব্যের রাপ সংগীতায়ন, নারী ও প্রকৃতির বহু রূপ অন্বেষণ প্রয়াসের মিশ্রণ থাকবে। একইসঙ্গে এতে পথনাটক, পোস্টার নাটক, ইনস্টলেশন ও পারফরম্যান্স আর্টের ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই গণপরিবেশনার উলেস্নখযোগ্য বৈশিষ্ট্য তাৎক্ষণিক উদ্ভাবন প্রক্রিয়া। অনেকাংশেই এটি কোনো পূর্বনির্ধারিত পরিবেশনা নয়। স্থান-স্থাপত্য-চলমানতা ও দর্শকের সংযোগে পূর্ণ হবে লাল মজলুম।'
ড. শাহমান মৈশান বলেন, 'লাল মজলুম একদিকে শিক্ষার্থী-শ্রমিক-জনতার জুলাই অভু্যত্থানের রক্তাক্ত স্মৃতি যেমন রোমন্থন করে পুনরায় তুলে ধরবে, তেমনই এই জনপদে ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে সংঘটিত গণ-অভু্যত্থানকেও একসূত্রে গাঁথবে। জনগণের রাজনৈতিক আত্মত্যাগের স্মৃতি ভুলে যাওয়ার বিরুদ্ধে অবিরত সংগ্রামের প্রয়োজনীয়তাকে জনপরিসরে শিল্পরূপ দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা এটি।'
তিনি আরও বলেন, 'সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিবাদ, ধর্মীয় জাতীয়তাবাদী ফ্যাসিবাদ, এমনকি ব্যক্তির ক্ষুদ্রতম পরিসরে থাকা মাইক্রো ফ্যাসিবাদকেও এই পরিবেশনা প্রশ্ন করবে। যেকোনো প্রকার ক্ষমতাকেই সমালোচনার নৈতিক সৌন্দর্য এবং মজলুমের কথা বলার রাজনৈতিক পরিসরকে কল্পনা করার ভাষা প্রভৃতি আত্মস্থ করে একটি হাইব্রিড শিল্পভাষ্য হবে লাল মজলুম।'
গণপরিবেশনার সহযোগী নির্দেশক ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রাগীব নাঈম। তিনি বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গণপরিবেশনাটি শুরু হবে। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের সামনের রাস্তা ও চারুকলার সামনে খন্ড খন্ডভাবে চলমান পরিবেশনাটি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এসে একটি গণ-অধিবেশনমূলক সংলাপের দৃশ্যায়নের মাধ্যমে শেষ হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, উদীচী, প্রাচ্যনাটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পী-কর্মী ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ দুই শতাধিক কলাকুশলী এই পরিবেশনায় অভিনয় এবং বিভিন্ন স্তরে অংশ নিচ্ছেন। গত অক্টোবরের শুরু থেকে পরিবেশনাটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ২ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন টিএসসির সুইমিংপুলে পরিবেশনা তৈরির মহড়া চলছে।