কুমিলস্নার তিতাসে নিজেদের প্রেমের সম্পর্ক গোপন রাখতে জান্নাতুল ফেরদৌসকে অপহরণ করে ছয় টুকরো করে কাঁঠালিয়া নদীতে ফেলে দেয় প্রেমিক তারেক মাহমুদ মুন্না।
গত ৯ নভেম্বর কুমিলস্নার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবিদা সুলতানা মলির আদালতের মুন্না স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর আগে ৮ নভেম্বর রাত ১১টায় কুমিলস্না শহর থেকে ডিবি পুলিশ মুন্নাকে আটক করে। তিতাস থানার ওসি মো. মামুনুর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস উপজেলার সাগরফেনা গ্রামের জামাল সরকারের মেয়ে এবং তারেক মাহমুদ মুন্না একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। গত ৫ সেপ্টেম্বর জান্নাত নিখোঁজ হলে ১১ সেপ্টেম্বর জান্নাতের মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে মুন্নাসহ সাতজনকে আসামি করে তিতাস থানায় অপহরণ মামলা করেন।
মামলার এজাহার, আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জান্নাত ও মুন্না সম্পর্কে চাচাত ভাইবোন। একপর্যায়ে তারা পরকীয়ায় আসক্ত হয়। তখন জান্নাতের সংসারে দুই সন্তান ছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে ২০১৮ সালে জান্নাত স্বামীর সংসার থেকে চলে আসেন এবং মুন্না বিদেশ চলে যান। তবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। ২০২২ সালে মুন্না দেশে আসলে জান্নাত বিয়ের জন্য চাপ দেন। মুন্না বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে প্রথমে পারিবারিক ও পরে গ্রাম্য সালিশ বৈঠক হয়। বৈঠকে মুন্নার সঙ্গে জান্নাতের বিয়ে ঠিক হয়। তবে কাউকে না জানিয়ে এক মাস পর মুন্না আবার বিদেশ চলে যান। বিদেশ থাকা অবস্থায় জান্নাতের চরিত্র নিয়ে মুন্না বির্তক তুললে এতে জান্নাত ক্ষিপ্ত হন। চলতি বছরের আগস্টে মুন্না দেশে এসে গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেন। বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি জান্নাত। তখন জান্নাত মুন্নাকে হুমকি দেন প্রেমের বিষয়টি তার বউকে জানাবেন। তখন মুন্না পরিকল্পিতভাবে জান্নাতকে ডেকে ছয় টুকরো করে হোমনা উপজেলার কাঁঠালিয়া নদীতে ফেলে দেন। তিতাস থানার ওসি মামুনুর রশীদ বলেন, মুন্না হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপরও তার স্বীকারোক্তি কতটা সঠিক এবং এতে অন্য কেউ জড়িত কিনা; সেটি নিয়েও তদন্ত চলছে। মামলার প্রধান আসামি মুন্না, দ্বিতীয় আসামি তার মামা নাঈম কারাগারে রয়েছেন। তবে অপর পাঁচ আসামি জামিনে আছেন।