ফরিদপুরের সালথায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে মো. আনিচুর মোল্যা (৩০) নামে এক যুবককে কুপিয়ে তার দুটি হাত ও একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। অন্তত ৩০টি কোপ দেওয়া হয়েছে ওই যুবকের হাত-পায়ে। এতে হাতে ও পায়ের রগ কেটে গেছে।
পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ফরিদপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের পূর্বসোনাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত আনিচুর মোল্যা পূর্বসোনাপুর গ্রামের সাহেব মোল্যার ছেলে। এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আনিচুরের পরিবারের সঙ্গে প্রতিপক্ষের আতিক ফকিরের পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। আনিচুর সোনাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি খায়রুজ্জামান বাবুর সমর্থক আর আতিক ফকির বিএনপি নেতা প্রফেসর জয়নাল আবেদিনের সমর্থক। এর আগে ২০২১ সালে জমি নিয়ে তাদের মধ্যে মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তখন আতিক ফকিরের পরিবার প্রতিপক্ষ আনিচুর মোল্যার পরিবারকে আসামি করে একটি মামলা করে।
এরই জেরে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনিচুর তার বাড়ির সামনে মাঠের ভিতর দিয়ে মামলার হাজিরা দিতে ফরিদপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় প্রতিপক্ষের আতিক ফকির ও তার লোকজন তাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। পরে রাম দা, চাইনিজ কুড়াল ও চাপাতি দিয়ে আনিচুরকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে সটকে পড়েন প্রতিপক্ষের লোকজন।
সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাবু বলেন, আনিচুরকে অন্তত ৩০টি কোপ দেওয়া হয়েছে। তার দুটি হাত ও একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন। হাত-পায়ের হাড়গুলো কেটে ও ভেঙে যেভাবে চুরমার হয়েছে, তাতে তিনি বাঁচলে পঙ্গু হয়ে বাঁচতে হবে। এমন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হয়। তবে অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার্ড করেছেন।
হামলাকারীদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিএনপি নেতা প্রফেসর জয়নাল আবেদিন বলেন, আমি কোর্টে আছি। শুনেছি এলাকায় মারামারি হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, আনিচুর নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন, আতিক ফকির, হাসেম ফকির, আতিকুর মিয়া ও কাইয়ুম। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।