টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন জনপ্রিয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অশোক কুমার সিংহ সোমবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আদালতকে বলেছেন, গ্রেপ্তার করা দুই আসামির ও প্রত্যক্ষদর্শী তিন সাক্ষীর আদালতে দেওয়া জবানবন্দি ও অন্য আলামত থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ হয়- আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান ও তার তিন ভাইয়ের পরিকল্পনা এবং নির্দেশে ওই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল শহরের কথিত প্রভাবশালী 'খান পরিবারের' বড় ভাই। তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে জেলার চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার সাক্ষী গ্রহণের পর্ব শেষ হলো।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ বলেন, 'সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদুল হাসানের আদালতে তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যদানের সময় তিনি আদালতকে জানান, ২০১৪ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। তদন্তকালে তিনি বিভিন্ন উৎস থেকে জানতে পারেন, এ হত্যার সঙ্গে শহরের কলেজপাড়ার আনিসুল ইসলাম ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ আলী জড়িত থাকতে পারেন। তাদের গ্রেপ্তার করলে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা তারা স্বীকার করেন। পরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান, তার ভাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার পরিকল্পনা এবং নির্দেশে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি বের হয়ে আসে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আব্দুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতেও হত্যার বর্ণনা উঠে আসে।
টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান জানান, এখন বাদী ও আসামি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্কের পর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।