মৌলভীবাজারে অপসারণের নোটিশ দিলেও ভূমি ছাড়ছেন না দখলদারীরা

প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার শহরের আদালত সড়কের জজ কোর্টের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে থাকা জেলা প্রশাসনের ভূমি থেকে নিজেদের স্থাপনা অপসারণ করতে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গেল ১৫ মে তারিখে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে দেওয়া নোটিশ অমান্য করে এখনো আধাপাকা স্থাপনায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দখলদাররা। কোন জোরে তারা জমি ছাড়ছেন না এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বমহলে। এদিকে শহরের সবচেয়ে ব্যস্থতম সড়কের ওই জায়গা কয়েক যুগ ধরে বেদখলে থাকায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগেই আছে। এতে দায়সাড়া কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলা ভূমি অফিসের দুটি স্মারকের মূলে প্রেরিত প্রতিবেদন অনুযায়ী মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক নিশ্চিত হয়েছেন যে, মৌলভীবাজার সদর উপজেলাধীন ১০৫নং জেএলস্থিত মৌলভীবাজার মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার ১৪টি দাগের ৯.৮৪ শতক ভূমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন ১৮ ব্যক্তি। সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমি ও ইমারত (দখল ও পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ অনুযায়ী নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে স্থাপনা অপসারণপূর্বক অবৈধ দখল ত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। গেল ১৫ মে সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল হক স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে তিনি উলেস্নখ করেন, 'উলিস্নখিত সময়ের মধ্যে যদি অবৈধ দখল ত্যাগ এবং স্থাপনা অপসারণ না করেন, তবে জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার কর্তৃক নিয়োজিত এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বেদখলকারীদের উচ্ছেদক্রমে তা সকারের খাস দখলে আনা হবে।' নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- তোফাজ্জল হোসেন মনির, আলাল মিয়া, মফিজ মিয়া, মুজিবুল হক, ইসমাইল হোসেন, চন্দন মালাকার, রাজু মালাকার, ময়নুল ইসলাম, রহমান আহমদ, রকিব হোসেন, দুলন বৈদ্য, সৈয়দ ফারুক আহমদ, আরিফুর রহমান তুহিন, আজম রহমান, হাবিবুর রহমান, মানিক মিয়া, জিতু মিয়া, শিবু চন্দ। এদিকে নোটিশ প্রদানের প্রায় ৫ মাস পার হলেও সড়কে যত্রতত্র যানজট লাগিয়ে দখলদাররা অনায়াসে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এতে ক্ষোপ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। বেদখল ছেড়ে কেন যাচ্ছেন না এমনটা জানতে চাইলে রাকিব স্টোরের স্বত্বাধিকারী ইসমাইল হোসেন বলেন, 'এই ভূমি আমার অনেক আগের কাগজ করা। বহু আগে বিনিময়ের মাধ্যমে পেয়েছি। এখানকার ৫টি কক্ষের ভূমি নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে।' অপর দখলদার সমুজ আলীর ছেলে ময়নুল ইসলাম বলেন, 'জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অপসারণের নোটিশ পাওয়ার পর আদালতে আমরা মামলা করেছি।' মৌলভীবাজার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তার বলেন, 'অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দখলদারদের উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছিলেন। নোটিশে লেখা আছে, যদি তারা না যায়, তবে আমাদের জেলা প্রশাসনে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। পরে দেখলাম, তারা যায়নি। আমরা প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে নেওয়া হবে।' মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহীনা আক্তার অপসারণের নোটিশের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, 'এই নোটিশের বিপরীতে কোনো মামলা আছে কিনা, আমি দেখে জানাতে পারব।'