পুঠিয়ায় ধানের বাম্পার ফলন
নন্দীগ্রামের মাঠজুড়ে আমন কাটার ধুম
প্রকাশ | ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
শষ্যভান্ডার হিসেবে বেশ পরিচিত বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় শুরু হয়েছে আগাম জাতের রোপা আমন ধানা কাটা ও মাড়াই। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে, তাই উপজেলার প্রতিটা কৃষক রোপা ও আমন ধানের ফলনে বেশ খুশি। তারা ইতোমধ্যেই ধান কাটা ও মাড়াই করে ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। রোপা আমন ফসলের মাঠে এখন পাকা ধানের সোনালি হাসি। উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করে উঠছে। নন্দীগ্রাম উপজেলার অনেক মাঠেই কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকায় এবারও ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। ধানের ভালো ফলন ও বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে সোনালি হাসি। সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে রোপা আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পুরোদমে ধানকাটা মাড়াই শুরু করতে আরও দিন দশেক লাগবে। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা মেলে জমির ধান পেকে সোনালি রঙে শোভা ছড়িয়েছে। পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক-শ্রমিক। শ্রমিকের পাশাপাশি ধান কাটায় ব্যবহার করা হয় আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার বেশির ভাগ চাষি বিনা-১৭, ব্রি-ধান ৭৫, ব্রি-ধান ৪৯, ব্রি-ধান ৯০ জাতের ধান চাষ করেছেন। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বিনা-১৭ প্রতি মণ ১৩ থেকে ১৪শ' টাকা, ব্রি-ধান ৭৫ প্রতি মণ ১৪ থেকে ১৫শ' টাকা, ব্রি-ধান ৪৯ প্রতি মণ ১৫ থেকে ১৬শ' টাকা, ব্রি-ধান ৯০ প্রতি মণ ১৬ থেকে ১৭শ' টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রিধইল গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের এলাকায় ধানের ফলন ১৬-১৮ মণ হয়েছে। খরচ বাদ দিয়ে বিঘায় ৭-৮ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।' উপজেলার বর্ষণ গ্রামের কৃষক আজাদ হোসেন বলেন, 'আগাম জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছি দাম ও ফলন দুটোই ভালো পেয়েছি। এতে বেশ কিছু টাকা লাভ হয়েছে। আগাম ধান কাটতে পেরে এখন রবি-শস্য আবাদ করতে পারব।' উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গাজীউল হক বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। ধানের ফলন ও দাম বেশ ভালো। এবারো নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা লাভবান হবেন। পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানান, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন স্থানীয় কৃষক। উপজেলাজুড়ে রোপা আমন ধানের ক্ষেতগুলো ভরে উঠেছে সোনালী রঙে। আর ধান ক্ষেতগুলোকে নিয়ে কৃষকের রঙ্গিন স্বপ্নে হাসছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রোপা আমন ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাত হাজার ৫৯৮ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ২৬ হাজার ৫৯৪ মেট্রিক টন। যা গত বছর ছিল সাত হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৭১৯ মে. টন ধান। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে বলে জানা যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা সোনালী ফসল ধান কাটটে শুরু করেছেন। ধানচাষি রাজ্জাক আলী জানান, এবার ধান চাষে খরচ একটু কম হয়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানও ভালো হয়েছে। জায়গীরপাড়া এলাকার ধানচাষি নজরুল ইসলাম জানান, এই মৌসুমের শুরু থেকেই আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হওয়ায় ধানের জমিতে মাত্র ৩-৪ দিন পানির সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছে। এতে করে খরচটা অনেক কম হয়েছে এবং এ বছর ধানে রোগ বালাই কম। তাই ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এখন দাম কেমন হয়, সেটাই দেখার বিষয়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় ধানের চাষাবাদ অনেক ভালো হয়েছে। ধান চাষে গতবারের চেয়ে ভালো ফলন হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে।