স্বতন্ত্র পরিদপ্তর গঠনসহ ছয় দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভবনের দুটি ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং ফার্মেসি শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলাকালে মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভবনে বাইরে থেকে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রবেশ করতে পারেননি, ভেতর থেকেও কেউ বাইরে যেতে পারেননি।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। আন্দোলনকারীরা এ সময় স্বতন্ত্র পরিদপ্তর, ডিপেস্নামাধারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়া, গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি করে চাকরিজীবীদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রাখার দাবি তোলেন।
এ ছাড়া নিয়োগবিধিতে বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা, ঢাকা আইএইচটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর এবং আইএইচটিগুলোর জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার পস্ন্যান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগ বিধি ও অসঙ্গতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করার কথাও তারা বলেন।
মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন করে পেশাদার লাইসেন্স দেওয়া, ডিপেস্নামা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড গঠন ও প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা তৈরি এবং সব অনুষদের বিএসসি, এমএসসি ও বি-ফার্ম কোর্স চালু করা এবং স্কলারশিপসহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালুর দাবিও করছেন বিক্ষুব্ধরা।
বিএসসি উত্তীর্ণ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু ইসা বলেন, 'ডিপেস্নামা তিন বছর এবং বিএসসি চার বছর- এই সাত বছরের কোর্স শেষ করতে আমার লেগেছে ১১ বছর। এই শিক্ষাব্যবস্থার জন্য আমার জীবনের মূল্যবান চার বছর নষ্ট হয়েছে। এ জন্য এই সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে।'
আরেক মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী খান বলেন, '৭০ হাজার সদস্য নিয়ে আমাদের পরিবার। কিন্তু আমাদের নিয়োগসহ সব কাজ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তর ডাক্তারদের নিয়ে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। তারাই নানা সমস্যায় জর্জরিত। আমাদের কাজগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে পারছেন না। এ জন্য আমরা আলাদা পরিদপ্তর চাই।'
দুপুর ১টার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠকের ব্যবস্থা করে দেওয়ারও আশ্বাস দেন।
আশ্বাস পেয়ে দুপুর ২টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুটি ফটকের তালা খুলে দেন বিক্ষোভরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এবং ফার্মেসি শিক্ষার্থীরা।