আজকের যায়যায়দিন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সড়াতৈল গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী। এতে আশপাশের ৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের দীর্ঘ ৫৩ বছরের ভোগান্তির অবসান ঘটেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, জালালপুর ইউনিয়নের সালদার বিল সংলগ্ন বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। চারপাশে যাতায়াতের কোনো রাস্তা নেই। ঘরে ফসল তুলতে কৃষকদের বছরের পর বছর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় জনদুর্ভোগ কমাতে এখানে একটি সড়ক তৈরির দাবি উঠলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর এলাকাবাসীর অসহযোগিতায় তা হয়ে ওঠেনি। এবার কয়েক গ্রামের মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ কমাতে সড়াতৈল গ্রামবাসী নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে দেড় কিলোমিটার সড়ক তৈরির কাজ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে আধা কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শেষের দিকে। পাঁচিল-এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কসহ শাহজাদপুর যেতে অনেকটা পথ ঘুরে যেতে হয়। শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে হয় বর্ষায় নৌকাযোগে অনেক পথ মাড়িয়ে। এছাড়া মাঠ থেকে ফসল ঘরে আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট করতে হয়। সড়কটি তৈরি হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

সড়ক নির্মাণে কাজে যুক্ত কয়েকজন জানান, মজুরি ছাড়াই তারা কাজ করছেন। গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যারা শ্রম দিতে পারছেন না তারা আর্থিক সহযোগিতা করছেন। অনেকে আবার সড়ক তৈরির জমি দান করেছেন। দুই সপ্তাহ আগে নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সড়কের বড় একটি অংশ দৃশ্যমান হয়েছে। তবে কাজ শেষ হতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।

স্থানীয় ফারুক রেজা, আব্দুর রশিদ ও আব্দুর রহমান জানান, একটি সড়কের জন্য স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে এলাকার লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এলাকাবাসী বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। পরে এলাকাবাসী পরিকল্পনা করে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সবাই মিলে কাজ শুরু করা হয়।

বিলীন বসতঘর / ডাকাতিয়ার ভাঙনে হুমকিতে সহস্রাধিক পরিবার

সড়কটি নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা সমাজসেবক নজরুল ইসলাম বলেন, রাস্তাটি তৈরিতে বেশ কয়েকজন জমি দান করেছেন। গ্রামের সবাই শ্রম দিচ্ছেন। পাশের ক্ষেতের মাটি ফেলে কাঁচা সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসন বা অন্য কোনো জায়গা থেকে অর্থ বরাদ্দ পেলে সড়কটি পাকা করা সম্ভব হবে। সড়কের দুই পাশে গাছের চারা লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।