মধুপুরে সরকারি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ
প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুঁড়ি ইউনিয়নের দিগলবাইদ পুটিয়ামারা গ্রামের সরকারি পুকুরের চারপাশের ২১০টি আকাশমনি গাছ বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে বিক্রি করা ২১০টি গাছের মধ্যে ১৫-১৬টি গাছ কাটা হয়েছে। পরে স্থানীয়দের বাধার মুখে গাছকাটা বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় মৃত আ. মজিদ খানের ছেলে মতিয়ার রহমান টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, দিগলবাইদ পুটিয়ামারা গ্রামে একটি বিশাল একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় থেকে ইজারা দেওয়া হয়। সর্বশেষ দুই বছর আগে কুড়ালিয়া গ্রামের আ. করিমের ছেলে খোকন মিয়া পুকুরটি তিন বছরের জন্য ইজারা পান। ওই পুকুরের চারপাশে ২১০টি আকাশমনি গাছ লাগানো হয়। বর্তমানে গাছগুলোর অধিকাংশ পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি কুড়ালিয়া গ্রামের জুব্বার আলীর ছেলে লাল মিয়া (৪০) ও তার সহযোগী মৃত জালাল আকন্দের ছেলে লিয়াকত আলী ওই সরকারি গাছগুলো জামালপুর জেলার দড়িপাড়া গ্রামের মৃত ইউনুস মন্ডলের ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমানের কাছে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। পরে কাঠ ব্যবসায়ী লুৎফরের সহযোগী পলাশ কয়েকজন মিস্ত্রি নিয়ে গাছগুলো কাটতে থাকেন। ১৫-১৬টি গাছ কাটার পর ওই গ্রামের মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে স্থানীয়রা বাধা দেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে ইউএনও'কে অবগত করেন।
ইউএনও শোলাকুঁড়ি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রুস্তম আলীকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেন। তিনি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে কর্তনকৃত গাছের ৩৮টি খন্ড উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রেখেছেন এবং অন্য গাছগুলো কাটতে নিষেধ করেছেন।
অভিযোগকারী মতিয়ার রহমান জানান, 'স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রভাবশালী হওয়ায় লাল মিয়া ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি গাছ বিক্রি করে পকেট ভরেছেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে টাঙ্গাইলের আদালতে তার নামে দুইটি মামলা বিচারাধীন।'
অভিযুক্ত লাল মিয়া জানান, তাদের গ্রামে চারটি সমাজ রয়েছে। অনেক বছর আগে সমাজের লোকজন পুকুরের চারপাশে গাছগুলো রোপণ করে। সমাজের প্রয়োজন হওয়ায় তিনি গাছগুলো বিক্রি করেছেন। বিক্রীত টাকা তিনি চারটি সমাজের মসজিদের উন্নয়নের জন্য সমহারে বণ্টন করে দেবেন।
মধুপুর ইউএনও জুবায়ের হোসেন জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে গাছ কাটার খবর পেয়ে তিনি স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানকে দেখার দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান কাটা গাছের টুকরাগুলো জব্দ করে পরিষদে জমা রেখেছেন। পরে বিষয়টি সরেজমিন যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।