বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হঠাৎ যেন নড়েচড়ে বসেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত দুই দিনে জয়দেবপুর-রাজশাহী রেললাইনের কালিয়াকৈর উপজেলার পৃথক এলাকায় পরপর অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব অবৈধ স্থাপনা ভাড়া নিয়ে বসবাসরত শত শত মানুষ। এলাকাবাসী ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, জয়দেবপুর-রাজশাহী রেললাইনের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় রেললাইনের জমি জবর-দখল করে অবাধে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। শুধু বাড়িঘরই নয়, দালাল চক্রের মাধ্যমে রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা। এসব অবৈধ স্থাপনায় ব্যবসা ও বাসা ভাড়া দিয়ে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন প্রভাবশালী মহলসহ স্থানীয় দালাল চক্র। অথচ রেললাইনের দুই পাশে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠায় ট্রেন চলাচলে বিভিন্ন সমস্যা হয়। এ ছাড়াও অবৈধ স্থাপনার কারণে জনসমাগম হওয়ায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা।
অন্যদিকে বিভিন্ন সময় রেললাইনের যন্ত্রপাতি চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত হচ্ছে। রেললাইনের আশপাশে মাদকের আখড়ায় পরিণত করেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বিভিন্ন সময় জবর-দখলকারীদের নানাভাবে সর্তক করলেও অজ্ঞাত কারণে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। হঠাৎ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান চালালেও সেটা অপ্রতুল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর যেন কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
গত বুধবার ওই রেললাইনের রতনপুর রেলস্টেশনের পাশে রেলওয়ে জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় রোববার দিনব্যাপী ওই রেললাইনের উপজেলার মাটিকাটা এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রেলওয়ে পুলিশসহ অন্যরা। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব অবৈধ স্থাপনা ভাড়া নিয়ে বসবাসরত শত শত মানুষ। জয়দেবপুর রেলওয়ে সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী জুয়েল মিয়া জানান, কিছু প্রভাবশালী মহল রেললাইনের পাশে অবৈধ স্থাপনা করে ব্যবসা ও বাসা ভাড়া দিয়ে বাণিজ্য চালিয়ে আসছিলেন। দুই পাশ অবৈধ স্থাপনা থাকায় রেললাইনের যন্ত্রপাতি চুরি-ছিনতাই ও মাদক ব্যবসায়ীর আখড়া হয়ে উঠছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে।