হঠাৎ করে পাটের দাম প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের ছয়টি পাটকল বন্ধের উপক্রম দেখা দিয়েছে। বর্তমানে ২২শ' টাকা মণের পাট ৩৬শ' টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাটকল মালিক সূত্র মতে, অন্তর্বর্তী সরকার পস্নাস্টিকের বস্তা, ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন, ব্যবহার, বেচাকেনা চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করতে যাচ্ছে। ফলে, গ্রামীণ মজুদদাররা প্রচুর পাট গুদামজাত করতে শুরু করায় বাজারে পাটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। শিল্প শহর সৈয়দপুরের ছয়টি পাটকলে মূলত সুতালি ও বস্তা তৈরি হয়ে থাকে। ইকু জুট প্রসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম জানান, মৌসুমের শুরুতে গত জুন-জুলাই মাসে প্রতিমণ পাট ২২শ' থেকে ২৪শ' টাকা টাকায় কিনেছি। সেই পাটের দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫শ' থেকে ৩৬শ' টাকায়। এতে করে পাটকল চালানো কঠিন হয়ে পড়বে।
বিসিক শিল্প নগরীতে অবস্থিত পোদ্দার অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী রাজ কুমার পোদ্দার জানান, তাদের পাটকলটিতে প্রতিদিন ১০ মেট্রিকটন বস্তা উৎপাদন হয়ে আসছিল। বর্তমান বাজারে পাটের চরম সংকট ও দাম বেশি হওয়ায় মিলের উৎপাদন নেমে এসেছে চার মেট্রিকটনে। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্র্বর্তী সরকার পরিবেশ রক্ষায় পস্নাস্টিক পণ্য নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ঘোষণাটি নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী। কারণ পস্নাস্টিক বন্ধ হলে পাটের বস্তা ও ব্যাগের চাহিদা বাড়বে। আর এ সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির মজুদদার কাঁচা পাট মজুদ করতে শুরু করেছেন। আমরা আশপাশের হাট-বাজারগুলোতে দেখছি, হঠাৎ পাট উধাও হয়ে গেছে। এসব পাট মজুদ করা হচ্ছে।
সৈয়দপুর-রংপুর সড়কের পাশে কলাবাগানে অবস্থিত রানু অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সুশীল কুমার দাস জানান, বেশি টাকা দিয়েও পাট সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। পাটের দাম বাড়লেও মিল তো চালাতে হবে। শ্রমিক-কর্মচারীদের বসিয়ে রাখা যাবে না। পাট মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাটকল মালিক সূত্র জানায়, একটি বস্তা উৎপাদনে প্রায় এক কেজি কাঁচা পাটের প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে খরচ পড়ে ১৪৫ টাকা। অথচ ওই বস্তা বাজারে বিক্রি করতে হয় ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এটি মিল মালিকদের জন্য বিশাল ক্ষতি।
সৈয়দপুর উপজেলা পাট সম্প্রসারণ বিভাগের পাট পরিদর্শক মহিবুর রহমান লোহানি জানান, পাট মজুদ করা অপরাধ। ওপরের নির্দেশনা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।