গাংনীর বিভিন্ন সড়কে হাটবাজার বাড়ছে দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানি
প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
মেহেরপুরের গাংনীর বিভিন্ন সড়ক ঘেঁষে অন্তত ১৫টি সাপ্তাহিক হাট বসে। নিজস্ব জায়গা না থাকায় রাস্তার দুইপাশে হাটবাজার বসায় পথচারীদের চলাচলে মারাত্মক অসুবিধা ছাড়াও প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির ঘটনা ছাড়াও অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করছে। প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাট মালিকরা বেপরোয়াভাবে রাস্তার ধারে বাজার বসাচ্ছেন ও খাজনা আদায় করছেন। তবে প্রশাসন বলছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটির দুইপাশে গোপালপুর, মদনাডাঙ্গা, গাঁড়াডোব রাইসমিল পাড়া, বাঁশবাড়িয়া, গাংনী, চেংগাড়া, জোড়পুকুরিয়া, তেরাইল, ছাতিয়ান, বাওট, আকুবপুর বসে বড় বড় হাটবাজার। আঞ্চলিক এই মহাসড়কটিতে দ্রম্নতগতির যান চলাচলে নিয়মিত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতিনিয়তই প্রাণহানি আর পঙ্গুত্ব বরণ করছে মানুষ। এ ছাড়াও গাংনী-কাথুলী- হাটবোয়ালিয়া সড়কের মড়কা, রাইপুর হেমায়েতপুরে রাস্তার উপর হাট বসে। এ ছাড়াও সিন্দুরকৌটা, ধানখোলা মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে বসে সাপ্তাহিক বাজার।
ট্রাকের ড্রাইভার আবেদ ও সালাম জানান, মেহেরপুর-গাংনী থেকে বিভিন্ন সবজি বোঝাই করে প্রতিদিনই শতাধিক ট্রাক নিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া দিয়ে ঢাকার পথে যেতে হয়। মহাসড়কের পাশে কোন কোন স্থানে সড়ক ঘেঁষে হাটবাজার বসায় ঝামেলা তৈরি হয়। মানুষ পথ ছাড়তে চায় না। বিশেষ করে গাংনী বাজার, পুড়াপাড়া, বাঁশবাড়িয়া, জোড়পুকুর, বাওট, মড়কা, রাইপুর ও হেমায়েতপুর বাজার তো পুরো সড়কের ওপরে বসে। এত প্রতিবন্ধকতা নিয়ে যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।
মড়কা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ঠান্টু মিয়া ও আসাদুজ্জামান জানান, রাস্তায় বসে ব্যবসা করতে চাই না। এখানে জীবনের নিরাপত্তা থাকে না। রাস্তার ওপর হাটবাজার বসানোর কারণে এখানে যানজট হয়। কিন্তু জিনিস তো বিক্রি করতে হবে। ইজারাদাররা নিয়মিত টোল আদায় করলেও বসার ব্যবস্থা করে না। একই কথা জানালেন হেমায়েতপুরের মাছ ব্যবসায়ী ইন্তাজুল। এদিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে হেমায়েতপুর হাট ইজারদার সোহেল জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হাট ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো জায়গা না থাকায় ব্যবসায়ীরা রাস্তার ধারে বসেন। নিষেধ করলেও শোনে না। আবার তারা ব্যবসা না করলে তাদের যেমন সংসার চলবে না, তেমনি ইজারদারদেরও পুুঁজি হারাতে হবে।
গাংনী থানা পুলিশ জানায়, মহাসড়ক ঘেঁষে কোনো হাটবাজারই বৈধ নয়। ট্রাফিক বিভাগ রাস্তা বাদ দিয়ে হাটবাজার বসানো থেকে বিরত থাকার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে ও ইজারদারদের সঙ্গে মতবিনিময় করে হাট না বসানোর তাগিদ দিচ্ছে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা জানান, আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়াও লোকাল রাস্তায় হাট বসানোর বিষয়টি দুঃখজনক। ইতোপূর্বে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েয়কটি হাট সরানোর চেষ্টা করলেও স্থানীয়দের চাহিদা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা শুনে ফিরে আসতে হয়েছে। তবে হাট না বসানো ও চলাচলে সাবধানতা অবলম্বন রতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করা হচ্ছে।