কালীগঞ্জে স্ত্রীকে কটাক্ষ করায় বন্ধুকে হত্যা

প্রকাশ | ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

গাজীপুর মহানগর ও কালীগঞ্জ প্রতিনিধি
গাজীপুরের কালীগঞ্জে স্ত্রীকে কটাক্ষ করায় ফোন করে ডেকে এনে বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেক্সি বাবু রোজারিও (৪৩) নামে ওই ব্যক্তিকে হত্যার পর লাশ ডোবায় ফেলে রাখা হয়। পরে অপহরণের নাটক সাজিয়ে তার বাবার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে অভিযুক্ত ব্যক্তি। শনিবার সকালে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এসব তথ্য দেন গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। ঘটনার প্রায় ৪ মাস পর ডোবা থেকে রেক্সির গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের মুকুল রোজারিওর ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত লিংকন জন রোজারিওকে (৩৮) গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার লিংকন একই গ্রামের মৃত লিও রোজারিওর ছেলে। এর আগে গত শুক্রবার ভোরে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিনের মালিকানাধীন মাছের ঘের থেকে লিংকন জন রোজারিওকে গ্রেপ্তার করা হয়। গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্তর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুক্রবার বিকালে ঢাকা-ভৈরব রেলপথের কালীগঞ্জ উপজেলার দড়িপাড়া গ্রামের রেললাইনের পাশের ডোবা থেকে পুলিশ রেক্সি বাবুর মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের বাবা মুকুল রোজারিও জানান, গত ১০ আগস্ট তার একমাত্র ছেলে রেক্সি বাবু রোজারিওর মোবাইল ফোনে একটি নাম্বার থেকে কল আসে। পরে সে তার মাকে দড়িপাড়া বাজারে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। ওইদিন গভীর রাতেও ছেলে ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করে রাতেই কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি করেন। এক পর্যায়ে ছেলের মোবাইল থেকে ফোন করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা জানায় ছেলেকে জীবিত পেতে হলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে গাজীপুর শালবনে আসেন। এরপর থেকে ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার ছেলের পূর্বপরিচিত লিংকনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন লিংকনসহ তার সহযোগীরা রেক্সিকে অপহরণ করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। অপহরণের এক সপ্তাহ পর তিনি কালীগঞ্জ থানায় অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশের অপর একটি সূত্র জানায়, আসামি লিংকন একদিন রেক্সিকে কটাক্ষ করে বলে, 'তুই হিজড়া।' তখন সে বলে, 'তোর বউকে আমার কাছে একদিনের জন্য দিস, তাকে দেখিয়ে দেবো আমি হিজড়া কি না।' এর জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে সে রেক্সিকে হত্যা করে মৃতদেহ ডোবায় ফেলে রেখে অপহরণের নাটক সাজায়। ঘটনার পর থেকে লিংকন পলাতক ছিল। গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির জানান, বাদী মুকুল রোজারিওর সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে আসামি লিংকনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে লিংকন হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।