চাঁদপুরে স্ত্রীকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে গুমের চেষ্টার অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও গাইবান্ধার সাঘাটায় দুই যুবককে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুরের মতলব উত্তরে স্ত্রী ফেরদৌসী আক্তারকে হত্যা করে নদীতে মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেন স্বামী ইয়াসিন। বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের গাজীপুর এলাকায় ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে স্বামী ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত ফেরদৌসী আক্তার আন্না (২৫) মতলব উত্তর উপজেলার নবুরকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়াল মেয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, স্বামীর বসতঘরে রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে স্বামী ইয়াসিন রাগান্বিত হয়ে স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে গলাটিপে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। যাতে হত্যাকান্ডের বিষয়টি কেউ জানতে না পারে। শুক্রবার সকালে চরমাছুয়া এলাকায় ধনাগোদা নদী থেকে নিহত ফেরদৌসী আক্তার আন্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের বড় ছেলে মো. আব্দুলস্নাহ (৭) জানায়, 'রাতে ভাত খেতে আসলে আব্বুর সঙ্গে আম্মুর ঝগড়া হয়। রাতে আম্মুকে গ্যাসের চুলার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় এবং গলা টিপে হত্যা করে। পরে আব্বু জামা কাপড় পরিবর্তন করে অটোরিকশায় করে আম্মুকে নিয়ে বের হয়ে যায়।'
মতলব উত্তর থানার ওসি রবিউল হক জানান, আগুনে পুড়িয়ে লাশ গুম করার উদ্দেশে ধনাগোদা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত স্বামী ইয়াসিনকে আটক করা হয়েছে।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গাবতলী এলাকায় জামাইকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ওই এলাকা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবক হলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সৈয়দপুর এলাকার আমজাদ শিকদারের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০)।
জানা গেছে, গত জুন মাসে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কালিয়াকৈর উপজেলার গাবতলী এলাকায় সালাউদ্দিনের মেয়ে ও তার মামাতো বোন কানিজ ফাতেমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। শুক্রবার সকালে স্বামী জাহাঙ্গীরের মৃতু্যর খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয় তার পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের নিহতের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় তার স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন জাহাঙ্গীরকে হত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
কালিয়াকৈর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পর তার মৃতু্যর সঠিক কারণ জানা যাবে।
সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের ছাটকালপানি গ্রামে মন্দির থেকে বিদু্যৎ সংযোগ না দেওয়ায় নঈম চন্দ্র দাসের ছেলে সিধাম চন্দ্র দাসকে (৩৫) হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে বোনারপাড়া বাজারে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শিমুলতাই গ্রামের জোবেদ আলীর ছেলে মিলন মিয়া ছাটকালপানি গ্রামে পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। গ্রামের মন্দিরের মিটার থেকে মিলন তার পুকুরে বিদু্যৎ সংযোগ নিতে চাইলে সিধাম চন্দ্র দাস বাধা দেন। এর জেরে বৃহস্পতিবার রাতে মিলন ও তার সহোদর ভাই আবু কালাম, এরশাদ, লিটন এবং চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম সংঘবদ্ধ হয়ে সিধাম চন্দ্র দাসকে বোনারপাড়া বাজারের মাছ পট্টিতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে তাকে ভর্তি করা হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।