মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ। প্রতিদিনই পদ্মা নদীতে দিন-রাতে চলছে যৌথ অভিযান। এসব অভিযানে ইলিশ মাছ ও জাল জব্দসহ করা হচ্ছে জেল-জরিমানা। জব্দ করা মাছ এতিমখানা ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণ এবং জব্দ জাল পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ইলিশ ধরা, বিক্রি, পরিবহণ ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় কেউ যেন ইলিশ ধরতে না পারে, সে জন্য সবসময় তৎপর রয়েছেন তারা। উপজেলায় এ পর্যন্ত মোট ১৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে ১২৪ কেজি ইলিশ এবং প্রায় দুই লাখ মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাছ উপজেলার পাঁচটি এতিমখানা এবং ৪৮টি হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে পদ্মা নদীতে অভিযান চালিয়ে আমজাদ মোলস্না নামের এক জেলেকে মাছ ধরার সময় সাত কেজি ইলিশ মাছসহ আটক করে পুলিশ। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউএনও। এ ছাড়া, মনির হোসেন (২০) ও বকুল বিশ্বাস (৩২) নামে দুইজনকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। আরও দুইজনকে আটক করলেও অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
হরিরামপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মুমিন খান বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে পুলিশ। প্রতিদিনই অভিযানে অফিসারসহ ৩-৪ জন করে পুলিশ সদস্য সহযোগিতা করেছেন। এর বাইরেও আমাদের কাছে কোনো সংবাদ আসলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নুরুল ইকরাম বলেন, সারাদেশের ন্যায় হরিরামপুরে বিভিন্ন মাছ ঘাট, আড়ত, পদ্মা-যমুনা বলবন্ত জলমহালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৪ পরিচালিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান চলমান। ২২ দিনব্যাপী এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে হরিরামপুর মৎস্য অধিদপ্তর বদ্ধপরিকর। ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে রয়েছে হরিরামপুর উপজেলা প্রশাসন। মা ইলিশ রক্ষায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।