কক্সবাজারের উখিয়া ইনানী সমুদ্র সৈকতের নৌবাহিনীর জেটিটি ভেঙে দ্বিখন্ডিত অবস্থায় লন্ডভন্ড হয়ে পড়েছে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে জোয়ারের পানির তোড়ে একটি বার্জের ধাক্কায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ শাজাহান।
বৃহস্পতিবার সকালে জেটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন।
গ্রামবাসী জানান, সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তাল রয়েছে সাগর। গতকাল রাত ২-৩টার সময় ছিল পূর্ণ জোয়ার। এ সময় প্রচন্ড ঢেউয়ে জেটির সঙ্গে বাঁধা একটি ছোট বার্জের ধাক্কায় জেটিটি ভেঙে গেছে।
জেটিঘাটের দোকানিরা জানিয়েছেন, বার্জটি জেটির সঙ্গে বেঁধে রাখায় মধ্যরাত থেকে বাতাসের ধাক্কায় বড় বড় আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এ সময় কেউ জেটিতে এবং বার্জে ছিল না। এমনকি রাত ২-৩টার দিকে জেটি ভেঙে যাওয়ার পরও সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো লোককে জেটির আশপাশে দেখা যায়নি।
জেটিসংলগ্ন তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপের সি-বিচ কর্মী জানান, গত কয়েক দিন ধরে ছোট আকারের তিনটি নৌযান জেটিতে কী যেন কাজ করছিল। এসব নৌযানগুলো সরিয়ে না রাখার কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন তিনি।
শেখ হাসিনা সরকারের সময় ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক নৌমহড়া অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী জেটিটি নির্মাণ করেছিল। এটি দীর্ঘ সৈকত দ্বিখন্ডিত করে নির্মাণের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীরা শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। এমনকি ২০২২ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত রুল জারি করেছিলেন।
নাগরিক ফোরাম সভাপতি আ ন ম হেলাল উদ্দিন জানান, আদালতের রুল জারির পরও জেটি অপসারণ করা হয়নি।
এদিকে গত বছর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক জাহাজ আসা-যাওয়া করছিল ওই জেটি দিয়ে। আগামী পহেলা নভেম্বর থেকেও জেটি দিয়ে দ্বীপে যাতায়াতের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল জাহাজ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে। কিন্তু জেটি দ্বিখন্ডিত হওয়ায় এখন জাহাজযোগে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে যাওয়া বিপত্তি দেখা দিয়েছে।