রূপসায় ব্রিজ নির্মাণের ৮ বছরেও তৈরি হয়নি সংযোগ সড়ক
প্রকাশ | ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
রূপসা (খুলনা) প্রতিনিধি
খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ হলে কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বলে তারা স্বপ্ন দেখেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বিগত সরকার দীর্ঘ আট বছর আগে ৫৪ লাখ টাকায় নির্মাণ করে ব্রিজটি। ব্রিজ নির্মাণ হলেও দুই পাশের যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় আরও ভোগান্তিতে পড়েছেন এই অঞ্চলের বাসিন্দারা।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের বাগমারা গুপিয়ার খালের উপর শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে আজমলের বাড়ির পাশে নির্মাণ হয় ব্রিজ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ব্রিজটি নির্মাণের প্রকল্প ব্যয় ৫৪ লাখ চার হাজার ৬৫০ টাকা ধরা হয়। যা ২০১৬-১৭ সালের অর্থ বছরে শেষ হয়। নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন মেসার্স মিজানুর রহমান টেডার্স।
তবে দীর্ঘদিনেও হয়নি ব্রিজটির দুই পাশের সংযোগ সড়ক। আর এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নৈহাটির জাবুসা ও বাগমারা গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এলাকাবাসী জানান, ব্রিজ নির্মাণের ফলে বাগমারা শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রূপসা কলেজ ও আল আকসা মাদ্রাসাসহ আশপাশ এলাকার অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজের দুই পাশের রাস্তা নির্মাণ করেনি। ব্রিজের দুই পাশে রয়েছে হাজারও বাড়ি। রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অসুস্থ রোগীদের আনা-নেওয়া করতে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ জানান, নকশা অনুযায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রিজের রাস্তা নির্মাণের জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা জমি না দেওয়ায় রাস্তার কাজ করা হয়নি।
ব্রিজটি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি জামানতের টাকাসহ সব বিল উত্তোলন করে। অসম্পূর্ণ রয়ে যায় ব্রিজের দুই পাশের অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ। এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয়েছে আট বছর আগে। তবে রাস্তা নির্মাণের কোনো অগ্রগতি আজও নেই। যার কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক মানুষের হাত-পা ভেঙেছে। রাস্তা না থাকায় অসুস্থ রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয় না। রাস্তাটি নির্মাণ হলে জাবুসা ও বাগমারা দুটি গ্রামের হাজারও মানুষ উপকৃত হবে।
শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ব্রিজের রাস্তা নির্মাণে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। জমি না পাওয়ায় রাস্তা মেরামত করা যাচ্ছে না।
তৎকালীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, ব্রিজের অ্যাপ্রোচ রোডের জন্য জমি না পাওয়ার কারণে এ অবস্থা। তবে সিডিউল যেভাবে ছিল, সেভাবে কাজ করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, 'আমি আসার আগে ব্রিজটি নির্মাণ হয়েছে। এ ছাড়া ব্রিজের রাস্তা নির্মাণের জন্য এলাকার কেউ জমি না দেওয়ায় এ অবস্থা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই সমাধানের চেষ্টা করবেন।