মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ৭০টি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা গত ১০ মাস ধরে বেতনভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদনসহ সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা।
জানা যায়, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বু্যরো'র আওতায় আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রাম পিইডিপি-৪ এর আওতায় আরডিআরএস বাংলাদেশ ও সহযোগী সংস্থা ইরা সুনামগঞ্জের মাধ্যমে এক শিক্ষকবিশিষ্ট স্কুল পরিচালনা করে আসছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকদের বেতন এবং ঘর ভাড়া পরিশোধ করা হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত কোনো প্রকার বেতন ভাতা ও ঘরের ভাড়া পরিশোধ হয়নি। ১০ মাসে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৭০ জন শিক্ষকের মাসিক বেতন ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩৫ লাখ টাকা ও ঘর ভাড়া বাবদ ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকাসহ মোট ৪৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিস্তু তারা ১০ মাসে কোনো টাকা পাননি। অথচ এই প্রকল্পের মেয়াদ ডিসেম্বর-২০২৪ এ শেষ।
সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা জানান, একজন শিক্ষক ক্লাস ওয়ান থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি বিষয়ে পাঠদান দিয়ে যাচ্ছেন। এলাকায় ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফেরাতে তারা প্রতিটি গ্রামে গিয়ে খুঁজে খুঁজে বের করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে এনে পাঠদান দিচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে ইউএনও, শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে পাঠদানের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু গত ১০ মাস থেকে শিক্ষরা কোনো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। প্রকল্পের সুপারভাইজার আব্দুল গাফফার চৌধুরী জানান, 'প্রকল্প থেকে আমরাও বেতনভাতা পাচ্ছি না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।'
উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বু্যরো মৌলভীবাজারের সহকারী পরিচালক কিশলয় চক্রবর্তী বলেন, সারাদেশের ৩৫৬টি উপজেলায় এনজিও আরডিআরএস ও ইরার মাধ্যমে কার্যক্রম চলমান আছে। বেতন ও ঘর ভাড়া সারাদেশের শিক্ষকদের বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে একনেকে বিলটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হলে শিক্ষকদের বেতন ও ঘর মালিকদের ভাড়া পরিশোধ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, 'আমি স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে ডেকে আমার কার্যালয়ে এনেছিলাম। তাদের কাছ থেকে জেনেছি, একনেকে বিল জমা রয়েছে, সেখান থেকে অনুমোদন হলেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন ও ঘর ভাড়া পরিশোধ করা হবে।'