মধ্যপাড়ার পাথর বিক্রিতে সরকারের জরুরি পদক্ষেপ দরকার

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল পাথর খনি দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়ায়। এখানকার পাথর বিশ্বমানের হলেও দেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে এ পাথর ব্যবহারের সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় পাথর বিক্রি অবিশ্বাস্য রকম কমে গেছে। এর ফলে মধ্যপাড়া খনি ইয়ার্ডে প্রায় ১০ লাখ মে. টন পাথরের স্তূপ গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ২৫ হাজার মে. টন পাথর রেলওয়ের রেলপথে ও ২ লাখ ২২ হাজার মে. টন পাথর (বোল্ডার) নদী শাসনে ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছে। মধ্যপাড়ায় পাথর বিক্রি কমে যাওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়েছে। মজুত পাথরসহ খনির পাথর উত্তোলনে গতিশীলতা ধরে রাখতে সরকারের দ্রম্নত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে বলে খনি সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। জানা গেছে, মধ্যপাড়ার ভূ-গর্ভস্থ পাথর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষাকালে তত্ত্বাবধান করেছে যুক্তরাজ্যের কিউইডি স্বাধীন টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেন্সি লি. ও সিঙ্গাপুরের অ্যাডমেটেরিয়াল টেকনোলোজিস পিটিই লি.। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে পাথরের বার্ষিক চাহিদা রয়েছে প্রায় ২ কোটি ১৬ লাখ মে. টন। এর সিংহভাগ আমদানি করা হয় ভারত ও ভুটান থেকে। আমদানীকৃত পাথরের চেয়ে দামে কম এবং গুণগত মান বেশি হওয়া সত্ত্বেও মধ্যপাড়ার পাথর ক্রয়ে একটি মহলের বরাবরই অনীহা পরিলক্ষিত হয়েছে। খনির একটি সূত্রমতে, সরকারি কাজে এখানকার পাথর ব্যবহার না করার প্রধান বাধাটি দুর্নীতি করতে না পারা। নদী শাসনে অথবা অন্য কাজে ঠিকাদার অতিরিক্ত বিল সাবমিট করতে পারেন না। দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে দেশের উন্নতমানের পাথর ব্যবহারে অনিহার কারণে খনির উত্তোলন করা পাথরের বিশাল স্তূপ গড়ে উঠেছে। খনি সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলেছে, মধ্যপাড়ার পাথর ব্যবহারে সরকারি সব প্রতিষ্ঠান, রেল ও নদী শাসনে বাধ্যবাধকতা রাখা দরকার। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লি. (এমজিএমসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে ৫-২০ (৩-৪) মিমি, ২০-৪০ মিমি, ৪০-৬০ মিমি (বস্নাস্ট), ৬০-৮০ মিমি ও বোল্ডার এই ৫টি সাইজে পাথর উৎপাদিত হচ্ছে। তবে রেলপথে ব্যবহৃত ৫ লাখ ২৫ হাজার টন বস্নাস্ট পাথর এবং নদী শাসনের কাজে ব্যবহৃত ২ লাখ ২২ হাজার টন বোল্ডারের বিক্রি কমে গেছে। জিটিসি সুষ্ঠুভাবে খনি পরিচালনা করতে পারলে একদিকে দেশের পাথরের চাহিদার অনেকটাই পূরণ হবে, অন্যদিকে খনিটির উৎপাদিত পাথর বিক্রি বাড়লে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।