হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে কাগজে কলমে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে কর্মরত আছেন ৪ ডাক্তার। কিন্তু বাস্তবে তারা কেউ মাধবপুর হাসপাতালে কর্মরত নেই। ডাক্তার না থাকায় উপজেলাবাসী চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২০১৯ সালে থেকে অনুপস্থিতি আছেন ডাক্তার বিশাখা মাশুক। তাকে কাগজে-কলমে নোয়াপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রদায়ন দেখানো হয়েছে। কিন্তু যোগদান করেই তিনি লাপাত্তা। স্বাস্থ্য বিভাগ বলতে পারে না তিনি কোথায় আছেন। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ৫ বছর ধরে ডাক্তার অনুপস্থিত থাকায় ওই এলাকার প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নোয়াপাড়া চা বাগানের ইউপি সদস্য বাবুল রেলি জানান- নোয়াপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন এমবিবিএস ডাক্তার থাকলে ৩টি চা-বাগানে চিকিৎসা বঞ্চিত নিম্ন আয়ের মানুষ খুব সহজে চিকিৎসা নিতে পারত। এছাড়া আশপাশের কমপক্ষে ১০ গ্রামে মানুষের জরুরি চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু বিশাখা মাসুদ নামে একজন এমবিবিএস ডাক্তার যোগদানের পর থেকে অনুপস্থিত। কাগজে-কলমে এখনো তিনি এখানে কর্মরত। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ওই ডাক্তার এখন কোথায় আছেন খোদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভালো জানে না।
একইভাবে দেখা মিলছে না জুনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যানেসথেসিয়া ডা. এ এস. এম. রায়হানুল হকের। তিনি মাধবপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী সায়েদুল হকের ছেলে। তিনি প্রেষণে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে জটিল অপারেশনসহ চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের। মেডিকেল অফিসার ডা. ফরওয়া ফারদিন অমি ২০১৯ সাল থেকে অনুপস্থিত। তিনিও বিগত সরকারের সময় প্রভাব খাটিয়ে যোগদানের কয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকায় একটি হাসপাতালে প্রেষণে চলে যান।
একইভাবে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক) ডা. মির্জা ওমর বেগ ২০২২ সাল থেকে অনুপস্থিত। এ স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সেটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে হওয়ায় অনেক দুর্ঘটনার রোগী চিকিৎসা সেবা না পেয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে হয়। তিনিও সিলেটের একটি হাসপাতালে প্রেষণে রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। একসঙ্গে ৪ জন চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে ৩টি উপজেলার লোকজন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমরুল হাসান জানান, 'আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন নূরুল হক জানান, তাদের অনুপস্থিততে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।