বাংলাদেশি জেলেরা অলস বসে থাকলেও বেপরোয়া ভারতীয়রা

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন পদ্মায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ

প্রকাশ | ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর চারঘাটে পদ্মার পিরোজপুর অংশে ডিঙ্গি নৌকায় ইলিশ মাছ আহরণ করছেন ভারতীয় জেলে -যাযাদি
মা ইলিশ রক্ষা ও জাটকা সংরক্ষণে পদ্মা নদী ও বড়াল নদীতে গত ১৩ অক্টোবর হতে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিক্রয় সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে অর্থ জরিমানা ছাড়াও বিভিন্ন মেয়াদে জেলের বিধান রয়েছে। তবে বিশেষ করে চারঘাট উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর অবস্থান বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী হওয়ায় স্থানীয় দেশীয় জেলেরা সরকারি নির্দেশনা মেনে চললেও অবাধে মাছ আহরণ করছেন ভারতীয় জেলেরা। ফলে সীমান্তবর্তী উপজেলায় বহমান পদ্মায় ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির সরকারি উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন রাওথা গ্রামে জেলে রহিম। প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ নদী সীমান্তবর্তী ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে মা ইলিশ সংরক্ষণ, জাটকা নিধন বন্ধ ও ইলিশের অবাধ প্রজননে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ইউসুফপুর, থানাপাড়া, চারঘাট, গোপালপুর, চন্দনশহর, পিরোজপুর, রাওথা সংলগ্ন পদ্মা নদীতে ছোট ছোট নৌকা ব্যবহার করে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ভারতীয় জেলেরা তাদের সীমানায় মাছ আহরণ করছেন। বাংলাদেশ সীমানায় মাছ আহরণ বন্ধে মৎস্য অধিদপ্তরের সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করলেও ব্যবস্থা নিতে পারছে না ভারতীয় জেলেদের বিরুদ্ধে। ফলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা সেইভাবে সফল হচ্ছে না। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকায় উপজেলার নদী তীর জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কার্ডধারী প্রায় ৫৭০ জন জেলেকে ভিজিএফ সহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে, যেন তাদের কোনো কষ্ট না হয়। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়ালিউলস্নাহ মোলস্না বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নদীতে মৎস্য বিভাগ, প্রশাসন, নৌ-পুলিশ সমন্বয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। কয়েকদিনের অভিযানে প্রায় ১৬ হাজার কারেন্ট জাল ও ৬ কেজি মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হলে মাছের উৎপাদন বাড়বে বলে তার আশা। মা ইলিশ রক্ষায় দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের জেলেদের এ সময় নিরুৎসাহিত করতে পারলে পদ্মায় ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি, গুণগত মান বৃদ্ধি ও বড় আকারের ইলিশ মাছ উৎপাদন হবে বলে জানান সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।