উত্তর ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের শিক্ষাব্যবস্থা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয়েছে সুসং মহাবিদ্যালয়টি। হাঁটি হাঁটি পা-পা করে এগুলেও সময়ের প্রয়োজনে ২০১৬ সালের ২৩ মে জাতীয়করণের মাধ্যমে নামকরণ হয় সুসং সরকারি মহাবিদ্যালয়। কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে চলমান রয়েছে পাঠদান। এতে শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। কলেজে চালু আছে পঠিত বিষয়ের ১৯টি শাখা। শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক না থাকায় চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে কলেজের পাঠদান ও শিক্ষা কার্যক্রম।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক মিলে কলেজে ক্যাডার ও ননক্যাডার মিলে ৩৫ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ২৪ জন। শূন্য রয়েছে ১১টি শিক্ষকের পদ। কলেজে খন্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ায় প্রতি মাসে অতিরিক্ত গুণতে হচ্ছে প্রায় দুই লাখ টাকা। আগামী ফেব্রম্নয়ারী মাস নাগাত চারজন প্রভাষকের পদ শূন্য হবে। সরকারিভাবে নিয়োগ না থাকায় পাঠদান তথা শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কলেজে ডিগ্রি ও উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসা শাখায় শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ৫ হাজার। কাম্যসংখ্যক শিক্ষক না থাকায় সেকশন অনুযায়ী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ের ক্লাস নেওয়া যায় না। এতে কলেজের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা।
নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীসহ নানা ধর্ম-বর্ণের অধিবাসী অধু্যষিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই কলেজটিতে অনার্স কোর্স চালু করা এই জনপদের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। বিভিন্ন সময় করা হয়েছে মানববন্ধন। অনার্স কোর্স চালুর জন্য কলেজে রয়েছে যথেষ্ট অবকাঠামো। এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৮টি বিষয়ে অনার্স কোর্স খোলার অনুমতি দেয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এ সংক্রান্ত কার্যক্রম স্থগিত রাখায় অনার্স খোলার বিষয়টিও স্থবির হয়ে রয়েছে।
কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আইনুল হক বলেন, শিক্ষকের অভাবে কলেজে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া এবং সিলেবাস শেষ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এ ছাড়া কলেজে অতিথি শিক্ষক থাকলেও অনেক সময় ক্লাস নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রেদওয়ানুর রহমান বলেন, 'কলেজের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠিয়েছি। শিক্ষার্থীদের সঠিক পাঠদান, শিক্ষকের পদ সৃজন, কলেজে অনার্স কোর্স চালু এবং কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সবার সহযোগিতা চাই।'