কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় যশোরের সিভিল সার্জনের আন্দোলনবিরোধী বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিগত সময় আওয়ামীপন্থি পরিচয় দেওয়া সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান এখন ভোল পাল্টানোর চেষ্টার মধ্যেই এই ভিডিও ভাইরাল হয়। এসব ঘটনায় যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় যশোর সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনের বিরোধিতা করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে জেলার চিকিৎসক নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন তিনি। ওই বিক্ষোভ সমাবেশের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক মিনিট ১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিও'তে সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান আন্দোলনকারীদের ফ্যাসিবাদি, জঙ্গি বলে আখ্যা দেন। তিনি দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যে হত্যাযজ্ঞ ভাঙচুর চালানো হয়েছে, এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোটা আন্দোলনের প্রতিটা দাবি মেনে নিয়েছেন। এসব শিক্ষার্থী কোটা আন্দোলনের নামে এক দফা দাবি উঠিয়েছে। সেটা কখনো আমরা মেনে নিতে পারি না। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এই শক্তিকে আমরা ঘৃণা করি। এই শক্তিকে আমরা প্রতিহত করব।' এ সময় সব স্তরের চিকিৎসককে এক দফার দাবির বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে, বিগত সরকারের সময় আওয়ামীপন্থি পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ভোল পাল্টানো শুরু করেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, যশোর সিভিল সার্জন অফিস ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানসমূহে ১১-২০তম গ্রেডে (তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) ১৯৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অভিযোগ আছে, এসব নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য আট উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মোটা টাকার বাণিজ্য শেষ করেছেন ডা. মাহমুদুল হাসান। এখন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান স্বীকার করেছেন, ভাইরাল হওয়া ভিডিও-বক্তব্য তার নিজের। তিনি দাবি করেন, 'পূর্ববর্তী সময় আমাদের কিছুই করার ছিল না। ওই কর্মসূচিতে আমরা স্বেচ্ছায় যাইনি।' তার পরিবার ডানপন্থি পরিবার বলেও তিনি দাবি করেন।