দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নানা কারণে কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন হিজড়া জনগোষ্ঠী। তাদের অনেকেই এখন বেকার। এ কারণে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরতে এবং সবার মতো সব অধিকার নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার অধিকার সুনিশ্চিতে সরকার ও গণমাধ্যমকর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন রাজশাহীর হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা। কাজ না থাকায় বেঁচে থাকার তাগিদে ঋণ নিয়ে অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। তাদের অনেকেই আবার এখন অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এই অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীদের লেখনীর মধ্যে দিয়ে বর্তমান সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
রাজশাহীতে হিজড়া সম্প্রদায়ের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকারগুলো সুনিশ্চিত এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান মান উন্নয়নে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়েছে। গত রোববার রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় দিনের আলো হিজড়া সংঘের উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে রাজশাহীর গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।
মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, দিনের আলো হিজড়া সংঘ রাজশাহীর একটি স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন ও হিজড়াদের অধিকার ভিত্তিক সংগঠন। হিজড়া জনগোষ্ঠীকে সুসংগঠিতকরণের মাধ্যমে একই ছায়াতলে নিয়ে এসে তাদের অধিকার ও মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে ২০০২ সাল থেকে কাজ করে আসছে। ইতোমধ্যে এই সংগঠনের উদ্যোগে হিজড়া জনগোষ্ঠীর ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এ সময় পিছিয়ে পড়া হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যদের সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
মতবিনিময় সভায় সংঘের সভাপতি জয়িতা মোহনা মুঈন বলেন, তাদের অনেক সদস্যই এখন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কাজ হারিয়ে অনেকেই হয়েছেন বেকার। অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। হিজড়াদের আদি পেশাও এখন প্রায় বন্ধের পথে। তাই তাদের অনেক সদস্যই এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি এ সময় হিজড়াদের করা বিভিন্ন ভালো কাজগুলো সবার সামনে তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি জয়িতা মোহনা মুঈন। বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির উপদেষ্টা শরীফ সুমন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়িতা পলি এবং কোষাধ্যক্ষ জুলি। এছাড়া মতবিনিময় সভায় মূল ধারণাপত্র উপস্থাপন এবং এই সংগঠন বিভিন্ন কর্মকান্ড এবং সফলতার চিত্র উপস্থাপন করেন বস্নাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু সাঈদ।