শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১

কটিয়াদীতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজে পারাপার দুর্ঘটনার শঙ্কা

মাসুম পাঠান, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
  ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা কুড়িখাঁই নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজ -যাযাদি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার শিবনাথ সাহার বাজারসংলগ্ন কুড়িখাঁই নদীর ওপর নির্মিত প্রাচীন ব্রিজের মধ্যে বড় গর্ত, ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদ। ব্রিজের দু'পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। খসে পড়েছে পিলারের আস্তরণ ও ইট।

স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে পাটাতনের অংশ। ঝুঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী ব্রিজের ওপর দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীসহ সর্বসাধারণ। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

গত এক দশক ধরে নির্বাচনের আগে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যান ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রম্নতি দিলেও নির্বাচনের পরে আর কেউ খোঁজখবর রাখে না। ব্রিজটি পৌর সভা ও ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যবর্তী হওয়ায় দায় নিচ্ছে না কেউ।

অতীব জনগুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজের উপর দিয়ে বোয়ালিয়া, নামা বোয়ালিয়া, তেলিচারা, কাহেতেরটেকী, ভাংনাদী, চারিয়া, দড়িচারিয়া, মাগুরা, কুড়িখাঁই, চাতল, মুমুরদিয়া, জোয়ারিয়া ও পিপুলিয়াসহ অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ প্রতিদিন চলাচল করে থাকে।

ব্রিজসংলগ্ন রয়েছে একটি ঐতিহ্যবাহী বিশাল বাজার। ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি। ব্রিজের পাশেই শাহ শামসুদ্দিন সুলতান বোখারী (র.) মাজার।

প্রতি বছরেই এ মাজারে উরস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী এক বিশাল মেলা জমে। চারশ' বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলায় দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত ও মেলার দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে এই ব্রিজ দিয়ে।

এলাকাবাসীর দাবি, 'আমাদের কোনো এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র না থাকায় কারো কাছে বলার জায়গা পাচ্ছি না। যেন দেখার কেউ নেই।' সেতুটি রেলিং না থাকায় বেশ কয়েকবার নববধূ নিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনা এড়াতে জরুরি ভিত্তিতে সাময়িক চলাচলের উপযোগীসহ স্থানীয়ভাবে পুনর্নির্মাণ বা একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এলাকাবাসী।

শিবনাথ সাহার বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় বড় মালবাহী গাড়ি দিয়ে মালামাল আনতে পারছি না। লেবার দিয়ে মালামাল বাজারে আনতে বাড়তি কেয়ারিং খরচ বহন করতে হচ্ছে। নির্বাচনের আগে অনেকেই এসে বলে যায় সেতুটি পুনরায় নির্মাণ করবে। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে আর কেউ থাকিয়েও দেখে না সেতুটি।

অটোরিকশা চালক মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতিদিন এই ব্রিজে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। রাতের বেলায় এ ব্রিজে পারাপারে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অনতু বল জানান, সেতুটি পুনর্নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে