কুমিলস্নার তিতাসে বন্যার পানির স্রোতে ভেঙে যাওয়া গোমতী নদীর ডুবন্ত বাঁধ মেরামতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের হরিপুর সেতুর অ্যাপ্রোচ থেকে নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধের উপর দিয়ে জনগণের চলাচলের রাস্তা রয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে ভিটিকান্দি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের প্রায় দশ হাজার লোকজন যাতায়াত করত। বাঁধটি ভেঙে গোমতীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় জনগণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের হরিপুর সেতুর দক্ষিণপাশ থেকে নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ভিটিকান্দি ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার লোকজন সহজে আসমানিয়া বাজারে যাতায়াত করেন। এবারের বন্যা সময় পানির স্রোতে সড়কের প্রায় ২শ' মিটার ভেঙে গোমতী নদীতে বিলীন হয়ে যায়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এ পথের যাত্রীদের প্রায় ৪ কিলোমিটার অতিরিক্ত ঘুরে কদমতলী গ্রাম হয়ে আসমানিয়া বাজারে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, হরিপুর সেতু থেকে নারায়ণপুর অংশে প্রায় দুই কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের গোমতী নদীর দক্ষিণ পাশে ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে। ওই সড়কের মাঝ অংশের প্রায় ২শ' মিটার বাঁধ এবারের বন্যায় ভেঙে যায়। ২০২২ সালে ওই বাঁধের প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণের এলজিইডি দুই ধাপে ট্রেন্ডার আহ্বান করে। মেসার্স বিটস অ্যান্ড বাটস্ ৯৯৪ মিটার সড়ক ৮৯ লাখ ৮ হাজার ৬৪৪ টাকা এবং মেসার্স মদিনা কনস্ট্রাকশন এক হাজার ৬ মিটার সড়ক ৭১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৩ টাকায় পাকারণের কাজ পায়। ৬ মাস মেয়াদ বৃদ্ধির পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে কার্পেটিং শেষ না করে উভয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে উপজেলা এলজিইডি তাদের চুক্তি বাতিল করে। এর পর আর কোনো বরাদ্দ চাওয়া হয়নি।
নারায়ণপুর গ্রামের অটোচালক রমিজ উদ্দিন বলেন, 'সড়কটিতে ইটের কংকর বিছানো থাকলেও এ পথে আমরা যাতায়াত করতে পারতাম। বন্যায় এ অংশটি ভেঙে যাওয়ায় এখন আসমানিয়া খেয়াঘাট থেকে কদমতলী হয়ে দাসকান্দি, হরিপুর, পোড়াকান্দি, ভিটিকান্দি, ঘোষকান্দি, দুলারামপুর, মানিককান্দি, ইসলামাবাদ ও দুলারামপুরে আসতে হচ্ছে।' দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া ভিটিকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. বাবুল আহমেদ জানান, বাঁধের উপর এলজিইডির রাস্তা পাকাকরণের কাজ গত দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল। এবার বন্যায় সড়কটি মাঝের অংশ গোমতীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ পথে অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বালুবাহী ট্রাক চলাচল করত। বন্যার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, 'ভেঙে যাওয়া ডুবন্ত বাঁধের রাস্তাটি আমি সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করেছি। দুইশ' মিটার বাঁধের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে যে দিকনির্দেশনা পাব, সে আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিলস্না অঞ্চলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবদুলস্নাহ আল মামুন মুঠোফোনে বলেন, গোমতী নদীর তিতাস উপজেলা অংশে যে ডুবন্ত বাঁধটি রয়েছে সেটি আমরা পরিদর্শন করেছি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে বরাদ্দের জন্য পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রম্নত বাঁধটি সংস্কার করা হবে।